বিএনপি এখন অস্থিরতায় রয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় তাদের এই অবস্থা। রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু লাবিদ আল লিখনের চিকিৎসা সহায়তা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।সংবাদপত্রে খবর দেখে লিখনকে দেখতে যান কাদের। তিনি তার পরিবারকে নগদ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে চিকিৎসার সব খরচের দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে তার কথা হয়।ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আসলে কখন যে কী বলে, সেটা বোঝা খুব কঠিন, তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় নেই। একটা ক্ষমতার দল ক্ষমতায় না থাকলেই তাদের মধ্যে অস্থিরতাটা বাড়ে। তাদের তো আন্দোলন-সংগ্রামের অভিজ্ঞতা নেই, ইতিহাস নেই।জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে নিয়ে বিএনপি গঠনের পর ৫ বছরের মতো ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। এরপর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দুই মেয়াদে ১০ বছর ক্ষমতায় ছিল দলটি। ২০০৭ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর প্রথমে বিরোধী দলের আসনে ছিল বিএনপি। দশম সংসদ নির্বাচনের পর এখন দলটি রয়েছে সংসদের বাইরে।

একাদশ সংসদ নির্বাচন কখনও নির্দলীয়, কখনও সহায়ক সরকারের অধীনে করার দাবি জানানোয় বিএনপি নিয়ে এই মন্তব্য ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের।তিনি আরও বলেন, এই দলটির আন্দোলন করে ক্ষমতায় যাওয়ার সক্ষমতা নেই। তবে তারা আরও ভালো থাকতে পারত, যদি তারা গত পার্লামেন্ট নির্বাচনে আসত।আন্দোলনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বিএনপির পেছনে জনসমর্থনের কথা উঠে আসে ওবায়দুল কাদেরের কথায়।বিএনপি তো আর হেলা-ফেলার দল না, সাংগঠনিকভাবে তারা যতই দুর্বল হোক না কেন। একটা উল্লেখযোগ্য জনগণ তাদেরকে সমর্থন করে।বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন উদযাপনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে অংশ নিতে কাউকে বাধ্য করা হয়নি বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।এনিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন, ১৮ তারিখের সমাবেশে না কি স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েদের বাধ্য করে আনা হয়েছে।

আমি চ্যালেঞ্জ করলাম, কোনো স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা সেখানে ছিল না। সরকারি কর্মচারীদের বাধ্য করে নিয়ে আসা হয়েছে বলেছেন, এটা নির্জলা মিথ্যাচার। কাউকে বাধ্য করে আনার প্রশ্নই উঠে না। যারা এসেছে, তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসেছে।কাদের বলেন, আবার ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছে, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট নাকি ছিল। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, কোথায় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ছিল? আমি তো সেখানে ছিলাম, আমি তো দেখিনি।তিনি প্রমাণ করুন, কোথায় ছিল বুলেট গ্র“ফ জ্যাকেট। শেখ হাসিনা কাউকে পরোয়া করে না। আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে পরোয়া করে না, ভয় পায় না।৭ মার্চের ভাষণ উদযাপনে বিএনপি নেতাদের প্রতিক্রিয়ার দেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭ই মার্চকে তারা ভয় পায়। এই ভাষণকে তারা নিষিদ্ধ করেছিল, সেই ভাষণ যখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পায়, তখন থেকে বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তারই প্রকাশ হচ্ছে, ১৮ ও ২৫ তারিখের সমাবেশের পরে তাদের বক্তব্যে।আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মরহুম জিয়াউর রহমান এই ৭ই মার্চকে বলেছিলেন, স্বাধীনতার গ্রিন সিগনাল। আবার দেখা গেল জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় এলেন তখন ৭ই মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ হয়ে গেল।এই ভাষণ বাজানোর জন্য আমাদের অনেক নেতা-কর্মী নিগৃহীত হয়েছিল, অত্যাচারিত হয়েছিল, অনেককে মেরে পঙ্গু করে দিয়েছিল, পুলিশ দিয়ে মারধর করেছিল, জেলে পাঠিয়েছিল।আজকে ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বস্বীকৃত হওয়ায় তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে, তারা এটা সহ্য করতে পারছে না, তারা এইটাকে ভয় পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজলে তারা ভয়ে থাকে, বলেন কাদের।