নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এখনো আসেনি। বর্তমান কমিশনের সবচেয়ে বড় কাজ নির্বাচন। আমরা প্রতিটা নির্বাচনই সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্যেভাবে সম্পন্ন করতে চাই। যাতে নির্বাচন আর বিতর্কিত না হয়। আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পরে অনেকগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছি। যার মধ্যে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অন্যতম। আমরা চাই রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকেও ঠিক এভাবেই সুষ্ঠু এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে। এই কমিশনের আমরা প্রত্যেকটা সদস্যই এ ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌছেছি, যে আমরা প্রতিটা নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য উপায়ে করতে চাই। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের মতো কোন পরিস্থিতি এখনো তৈরী হয়নি।

তিনি মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন শপথ গ্রহণের পর থেকে তাদের প্রতি অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এ কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা সবকটি অনুবিভাগই কমিশনের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের সহযোগিতা করে আসছে। এই কমিশন ইতোমধ্যে অনেকগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের শুভ সূচনা করেছে এবং প্রশ্নের উর্ধেŸ থেকে এই নির্বাচনটা সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। সামনে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, এ নির্বাচনও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের সবধরণের পদক্ষেপ গৃহিত হয়েছে।

কবিতা খানম বলেন, স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র নাগরিকের পরিচয়বাহী আধুনিক পরিশীলিত একটি ডিজিটাল ডকুমেন্ট। বর্তমান বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এ পরিচয়পত্র একটি বহনযোগ্য দলিল, যা নাগরিকগণের পরিচয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সেবা-সুবিধা প্রদান তথা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা প্রদান করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। দ্রুততার হাতে যাতে এ কার্ড সকল ভোটারদের হাতে যাতে তুলে দিতে পারা যায়, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ সেই লক্ষ্যে প্রচুর পরিশ্রম দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সিটি কর্পোরেশনগুলোতে এ কার্ড সরবরাহের পরে জেলা পর্যায়ে সরবরাহের পদক্ষেপ গৃহিত হচ্ছে। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের প্রথম তারিখে ৩৭টি জেলায় একযোগে এই পরিচয়পত্র বিতরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হবে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে পল্লী অঞ্চলের আসন না কমিয়ে জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসনের সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে কমিশনের কাজ চলছে। না ভোটের বিধান চালু করা হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রাপ্য মতামত নিয়ে একটি উপ কমিটি কাজ করছে। তাদের মতামত ও সুপারিশগুলো কমিশনের বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম রাহাতুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারউজ্জামান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর ও গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল শেখ। স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিষয়ক উপস্থাপনা করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ তারিফুজ্জামান।

পরে প্রধান অতিথি কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিকের হাতে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র তুলে দিয়ে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।