গাজীপুরের শ্রীপুরে ধর্ষনের পর মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী এক শিশুকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহতের সৎ ভাইকে রবিবার আটক করেছে পুলিশ। নিহতের নাম মৌসুমী আক্তার (৮)। সে শ্রীপুর উপজেলার উত্তর গাজীপুর গ্রামের কুদ্দুছ আলীর মেয়ে এবং স্থানীয় গাজীপুর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখার প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী।

পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায়, শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া গ্রামের হাছেন আলী মারা যাওয়ার পর ছেলে ইদ্রিসকে নিয়ে তার স্ত্রী রমিজা খাতুন একই উপজেলার উত্তর গাজীপুর গ্রামের কুদ্দুছ আলীকে বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে করে। রমিজা খাতুনের দ্বিতীয় বিয়ের পর মৌসুমী আক্তারের জন্ম হয়। দ্বিতীয় স্বামী বৃদ্ধ ও অসুস্থ্য হওয়ায় রমিজা খাতুন অন্যের বাড়ীতে ঝিঁয়ের কাজ করে সংসার চালায়। দুই সৎ ভাই-বোন মৌসুমী ও ইদ্রিস রাতে একই ঘরে ঘুমাতো। গত কয়েকদিন ধরে মৌসুমীকে একই গ্রামের আঃ আউয়ালের ছেলে মনিরুজ্জামান জয় (১৫) নানাভাবে উত্যাক্ত করে আসছিল। শনিবার মৌসুমীর মা বিষয়টি জয়ের নানা-নানীকে জানায়। গাজীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র জয় তার নানা মৌসুমীদের প্রতিবেশী করম আলীর বাড়ীতে থেকে লেখাপড়া করে। শনিবার সন্ধ্যায় রমিজা তার স্বামী ও সন্তানদের ঘরে রেখে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে রাতে ফিরেনি। রবিবার ভোরে রমিজার বাড়ির লোকজনের ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে গিয়ে মৌসুমীকে রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। তার গলায় কালো দাগ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহতের সৎ ভাই ইদ্রিসকে আটক করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে মনিরুজ্জামান জয় পলাতক রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।

নিহতের সৎভাই ইদ্রিস আলী জানায়, বাড়িতে মায়ের অনুপস্থিতির সুযোগে ঘুমন্ত বোন ও অসুস্থ্য বাবাকে (সৎ) ঘরে রেখে পাশের বাজারে বাউল গানের অনুষ্ঠানে যাই। ভোরে বাড়ি ফিরে ঘরের দরজা খোলা পাই। পরে ঘরে ঢুকে মৌসুমীর রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখি।

শ্রীপুর মডেল থানার এখলাস উদ্দিন জানান, মৌসুমীকে পরিকল্পিত ভাবে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের গোপনাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝরছে। নিহতের গলায় কালোদাগ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার পর থেকে জয় পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহতের সৎ ভাই ইদ্রিসকে আটক করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে মনিরুজ্জামান জয় পলাতক রয়েছে। এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।