বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারত যাচ্ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশন সম্পন্নও হয় তাঁর। তবে তাঁর হাঁটাচলা স্বাভাবিক লাগেনি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে। জিজ্ঞাসাবাদে নিজের কাছে কিছুই নেই বলে জানান মোস্তাফিজুর। কিন্তু শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা অনড়। স্থানীয় একটি ক্লিনিকে এক্স-রে করানো হয় তাঁকে। সেখানে মেলে তাঁর পেটে স্বর্ণের অস্তিত্ব। তারপরও তা অস্বীকার করেন মোস্তাফিজুর। শুল্ক গোয়েন্দারা সিদ্ধান্ত নেন তবে পেট কেটেই বের করা হোক ওই স্বর্ণ! এর পরই মোস্তাফিজুর জানান দেন তাঁর পেটে স্বর্ণ আছে। লুঙ্গি পরিয়ে মোস্তাফিজুরকে বসানো হয়। আর দেওয়া হয় জুস। জুস পেটে যেতেই তিনি পায়ুপথ দিয়ে বের করে দেন দুটি স্বর্ণের বার।

কর্মকর্তারা জানান, ওই দুটি স্বর্ণের বারের প্রতিটির ওজন ১০০ গ্রাম করে। এগুলোর দাম ১০ লাখ টাকা! আজ বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। আটক মোস্তাফিজুর রহমানের বয়স ৪৩। তিনি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী এলাকার বাসিন্দা। তিনি আজ সকালে ভারতে যাওয়ার উদ্দেশে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে আসেন। শুল্ক গোয়েন্দারা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই যাত্রীকে নজরদারিতে রাখেন। কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে চলে যাওয়ার সময় ট্রাভেল ট্যাক্স চেকিং পয়েন্টে মোস্তাফিজুরকে চ্যালেঞ্জ করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিকভাবে, তিনি কোনোভাবেই স্বর্ণ থাকার কথা স্বীকার করছিলেন না। চেকপোস্টে শুল্ক গোয়েন্দার অফিসে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদেও মোস্তাফিজুর স্বর্ণ থাকার কথা অস্বীকার করতে থাকেন। পরে মোস্তাফিজুরকে নিয়ে যাওয়া হয় বেনাপোলের রজনী ক্লিনিকে। এক্স-রে তে স্বর্ণবারের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। কিন্তু মোস্তাফিজুর অস্বীকার করতেই থাকেন। এরপর শুল্ক গোয়েন্দাদের উদ্যোগে চিকিৎসক দিয়ে তলপেট কেটে স্বর্ণ বের করার জন্য হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। এরপর তিনি নমনীয় হন। অস্ত্রোপচার ছাড়া স্বর্ণ বের করে দেবেন বলে শুল্ক গোয়েন্দাদের জানান।

মোস্তাফিজুরকে শুল্ক গোয়েন্দা অফিসে প্রাণের জুস খেতে দেওয়া হয়। পরানো হয় লুঙ্গি। লুঙ্গি পরে শুল্ক গোয়েন্দাদের উপস্থিতিতে টয়লেটের অভ্যন্তরে বিশেষ কায়দায় পায়ুপথ দিয়ে দুটি স্বর্ণের বার বের করেন তিনি।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, বেনাপোলে এসে বাস থামার পর বাথরুমে গিয়ে মোস্তাফিজুর স্বর্ণ বার দুটো পায়ুপথে পুশ করেন। তিনি জানান, কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশনে এক ভারতীয় নাগরিকের কাছে ওই দুই স্বর্ণবার দেওয়ার কথা। বিনিময়ে তিনি ১০ হাজার রুপি পেতেন। মোস্তাফিজুর জানান, তিনি একজন দোকানদার। রকমারি পণ্যের পাশাপাশি ভারত থেকে শাড়ি, থ্রি-পিস ও কসমেটিকস এনে বিক্রি করেন। চলতি বছর তিনি ২২ বার ভারত ভ্রমণ করেন।