মডেল রাউধা আতিফের হত্যামামলাটি এবার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রাজশাহীর আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।এর আগে ১৭ অক্টোবর সিআইডি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করে রাউধা আত্মহত্যা করেছিলেন। তবে এই প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট হতে পারেননি আদালত। এজন্যই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন পিবিআইকে।
রাজশাহী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল আরিফ জানান, সপ্তাহখানেক আগে আদালত পিবিআইয়ের কাছে মামলার কাগজপত্র পাঠিয়েছেন। তৌহিদুল আরিফ আরও জানান, ইতিমধ্যে মামলার তদন্ত শুরু করেছেন পরিদর্শক আলমগীর হোসেন। তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দু’একদিনের মধ্যে তিনি নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন।প্রসঙ্গত, ২৯ মার্চ রাজশাহীর নওদাপাড়ায় ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রীনিবাস থেকে রাউধা আতিফের (২২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ওই কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। মালদ্বীপের নীলনয়না রাউধা বাংলাদেশে এসেছিলেন পড়তে। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি মডেলিং করতেন।রাউধার মৃত্যুর দিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ শাহমখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। রাউধার লাশ ময়নাতদন্তের পর রাজশাহীতে দাফন করা হয়েছিল।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাউধা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এরপর মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে এসে ঘটনা তদন্ত করেন। একই সময় রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন।তবে রাউধার বাবা মোহাম্মদ আতিফ এসব প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে এ বছরের ১০ এপ্রিল রাজশাহীর আদালতে হত্যামামলা দায়ের করেন।ওই মামলায় রাউধার সহপাঠী ভারতের কাশ্মিরের মেয়ে সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২১) একমাত্র আসামি করা হয়। কিন্তু সিরাতকে গ্রেফতার করা না হলেও দেশত্যাগে তার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ১৪ এপ্রিল হত্যা মামলাটি শাহমখদুম থানা থেকে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। এরপর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে দ্বিতীয়বারের মতো রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল। সে প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন।সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আসমাউল হক তদন্তে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, মালদ্বীপের এক যুবকের সঙ্গে রাউধার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তিনি পড়াশোনার জন্য লন্ডনে থাকেন। তার সঙ্গে রাউধার সম্পর্ক ভেঙে যায়, আর এজন্য তিনি আত্মহত্যা করেন। দু’দফার ময়নাতদন্ত, ভিসেরা ও মোবাইল ফোন পরীক্ষার পর তিনি এসব বিষয় নিশ্চিত হন।তবে আসমাউল হকের এই তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেননি আদালত। তাই মামলাটি পাঠিয়েছেন পিবিআইয়ে। সংস্থাটির তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলছেন, চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গেই তদন্ত শুরু করছেন।