স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সূচকে এগিয়ে রয়েছে। বাকিগুলো পূরণে আরও উদ্যোগী হওয়ারও তাগিদ দেয়া হয় মন্ত্রিসভা বৈঠকে। এছাড়া আগামী ২৬ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস। প্রতিবছরের মতো বিশ্বের ১৮২টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও এ দিবসটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরাপদ বাণিজ্য পরিবেশ’।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে বিকালে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) এনএম জিয়াউল আলম।মন্ত্রিসভা বৈঠকে যে সূচক তুলে ধরা হয়, এরমধ্যে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে মাথাপিছু আয়ের প্রয়োজন ১২৩০ ডলার, সেখানে পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে অর্জিত হয়েছে ১২৭১ ডলার, মানবসম্পদ উন্নয়নে ৬৬ শতাংশের বেশি প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশ অর্জন করতে পেরেছে ৭২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ আর অর্থনৈতিক সূচকে ৩২ শতাংশ লক্ষ্য হলেও বর্তমানে ২৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ অর্জন করতে পেরেছে।বাকি স্তরগুলো পূরণে সরকারের পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। এছাড়াও সিআরভিএস বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিষয়ে আলোচনা হয় মন্ত্রিসভা বৈঠকে।

তিনি বলেন, দিবসটি উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যের একটি উদ্বোধনী খাম, ৫ টাকা মূল্যের একটি ডাটা কার্ড এবং একটি বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন ও অবমুক্ত করেন।তিনি আরও বলেন, বৈঠকে ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদের কার্যক্রম অবহিত করা হয়। এ সময়ে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক হয়েছে ৮টি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে ৬৮টি, বাস্তবায়ন হয়েছে ৫৩টি বা ৭৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ, বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে ১৫টি বা ২২ দশমিক ০৬ শতাংশ, অনুমোদিত নীতি/কর্মকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে একটি, সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে ৮টি এবং সংসদে আইন পাস হয়েছে ৩টি। আর ২০১৬ সালের একই সময়ে (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর-২০১৬) বৈঠক হয়েছিল ১০টি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ১১৬টি, বাস্তবায়িত হয়েছে ৮০টি বা ৬৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ, বাস্তবায়নের অপেক্ষায় ছিল ৩৬টি বা ৩১ দশমিক ০৩ শতাংশ, অনুমোদিত নীতি/কর্মকৌশল গ্রহণ করা হয় ৫টি, সমঝোতা স্মারক সই হয় ৮টি এবং সংসদে আইন পাস হয় ১১টি।

এনএম জিয়াউল আলম বলেন, এছাড়াও স্বল্প উন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে গ্রহণ করা কার্যক্রম সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদকে অবহিত করা হয়। এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য তিনটা শর্ত পূরণ করতে হয়। শর্তগুলোর মধ্যে মাথাপিছু আয় এক হাজার ২৩০ ডলারের বিপরীতে সিপিডির হিসাবে অর্জিত হয়েছে এক হাজার ২৭২ ডলার ও বিবিএস’র হিসাবে এক হাজার ২৭১ ডলার। মানবসম্পদ উন্নয়নের হার ৬৬ শতাংশের বিপরীতে সিপিডির হিসাবে অর্জিত হয়েছে ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ ও বিবিএস’র হিসাবে ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা ৩২ শতাংশে নামিয়ে আনার বিপরীতে সিপিডির হিসাবে ২৫ শতাংশ ও বিবিএস’র হিসাবে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ।তিনি আরও বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে একটি শীতল পাটি তুলে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ফয়েজ আহমেদ। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীকে একটি শীতল পাটি উপহার দেওয়া হয়।