বরিশালের গৌরনদী উপজেলা যুবদলের সভাপতি মো. শফিকুর রহমান স্বপন শরীফকে প্রকাশ্যে হাতুড়িপেটাসহ ব্যাপক মারধর করেছে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের কর্মীরা। গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে বরিশাল-কাঠালবাড়ি রুটের বিএমএফ পরিবহনের একটি কাউন্টারের দখল নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে স্বপনের উপর প্রকাশ্যে হামলা চালায় তারা। গুরুতর আহত স্বপনকে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় যুবদল সহ বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শরীফ স্বপন বিগত পৌরসভা নির্বাচনে গৌরনদী পৌরসভার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হারিছুর রহমান হারিছের কাছে পরাজিত হন।

বিএমএফ পরিবহনের গৌরনদী কাউন্টার ম্যানেজার প্রত্যক্ষদর্শী মো. হাসানাত শরীফ জানান, বরিশাল-কাঠালবাড়ি রুটে বিএমএফ পরিবহনের বাস চলাচল শুরুর প্রথম থেকেই গৌরনদীতে ওই পরিবহনের টিকেটিং কমিশন ও কাউন্টারের দায়িত্ব পান উপজেলা যুবদলের সভাপতি শফিকুর রহমান স্বপন শরীফ। কিন্তু গত ১ মাস ধরে কাউন্টারের যাবতীয় আয়ের টাকা নিয়ে যাচ্ছিলো গৌরনদী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নাট্য ও ক্রীড়া সম্পাদক মো. আরিফ ও তার ভাই আতিক সহ অন্যান্যরা। একই সাথে তারা ওই কাউন্টার দখলের পায়তারা করে। ছাত্রলীগের পরিচয়ে কাউন্টারের আয়ের টাকা নিয়ে যাওয়ায় বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাকে অবহিত করেন স্বপন। ওই শীর্ষ নেতা তাকে (স্বপন) অভয় দেন এবং ঠিকভাবে কাউন্টার চালানোর পরামর্শ দেন।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতার সবুজ সংকেত পেয়ে আজ বেলা পৌঁনে ১২টার দিকে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে বিএমএফ কাউন্টারে বসেন যুবদল সভাপতি স্বপন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী আরিফ, আতিক, আলী ও টিটু সহ কয়েকজন কাউন্টারে গিয়ে আজকের আয়ের টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে হাতুড়ি এবং পানের দোকানের সুপারি কাটার ছর্তা (স্থানীয় ভাষা) দিয়ে যুবদল নেতা স্বপনের উপর হামলা চালায় তারা। ছাত্রলীগ পরিচয়ধারীরা স্বপনকে প্রকাশ্যে মারতে মারতে কাউন্টার থেকে বের করে বাস্ট্যান্ডের দক্ষিণ দিকে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বপনের বোন নাজমা বেগম তাকে রক্ষার চেষ্টা চালালে তাকেও মারধর করে ছাত্রলীগ পরিচয়ধারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত স্বপনকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করে।

হাতুড়িপেটায় স্বপনের মাথা, পিঠ, পা ও ঠোট ফেঁটে যায় এবং তার দুটি দাত পড়ে যায় বলে জানিয়েছেন স্বপনের সহকর্মী উপজেলা যুবদলের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. হাসানাত শরীফ। এদিকে উপজেলা যুবদল সভাপতি শরীফ স্বপনের উপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জেলা (উত্তর) বিএনপি’র সাধাণি সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান। হামলাকারীদের অন্যতম মো. আতিক বলেন, স্বপন বিএনপি করে। বিএনপি’র হয়ে গত মেয়র নির্বাচন করেছিলো। আজ বিএমএফ কাউন্টারে বিএনপি’র মিটিং করছিলো স্বপন। খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের মারধর করে মিটিং পন্ড করে দেয়। হামলা ও মারধরের কথা স্বীকার করে গৌরনদী থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।