বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সুদূরপ্রসারী নীল নকশার মধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আসা হয়েছে- এটা মাইনাস ওয়ান। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই নীল নকশা চক্রান্ত শুরু হয়, তা আমরা নস্যাৎ করতে ব্যর্থ হয়েছি। তিনি বলেন, কী অপরাধ তার? অপরাধ হলো তিনি বাংলাদেশের মানুষের কথা বলেন, অপরাধ হচ্ছে মানুষের যে কথা বলার অধিকার, সে অধিকারের কথা বলেন। অপরাধ হলো তিনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চান এবং একইসাথে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ দেখতে চান। এটাই তার অপরাধ।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের সাজা বাতিলের দাবিতে ৯০’ র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের ব্যানারে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর একটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে ফখরুল বলেন, আমাদের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাহেব সব সময় একটা কথা বলেন- রাজনীতিকে খালেদা মুক্ত করতে হবে। নিশ্চয়ই আপনাদের মনে পড়ে যারা রাজনীতির চর্চা করেন। এই একটি কথা তিনি বলেন যে, বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে তাকে দূরে সরে যেতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নীল নকশার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে, সে মামলাটি হয়েছিল ১/১১ এর পরে। ১/১১ এর পরে তার বিরুদ্ধে মামলা ছিল চারটি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা ছিল পনেরটি। এই একই ধরনের মামলা ছিল দুর্নীতি মামলা। ১/১১ কুশীলবদের সহযোগিতায় তিনি ক্ষমতায় আসলেন। আসার পরে তিনি তার সব মামলাগুলো তুলে নিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাগুলো থাকল। চারটা মামলাই থাকল। পরবর্তীতে আরও অনেকগুলো ক্রিমিনাল কেস যুক্ত হয়েছে। বোমা মারা, তারপর একইসঙ্গে পাঁচটি থানায় উড়ে গিয়ে বাস পোড়ানো। এই ধরনের মামলা তার বিরুদ্ধে হয়েছে। ২০১৫ সালের পরে। এই মামলাগুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশনেত্রীকে রাজনীতিতে স্বস্তিতে থাকতে না দেয়া।কোটা আন্দোলন পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেন ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের না আছে যোগ্যতা, না আছে শক্তি। আমি সাধারণত নাম ধরে বলি না। আজকে একটু বলতে চাই। হেলালউদ্দিন আহমেদ। তিনি কমিশনে অফিস করেন নির্দিষ্ট সময়। তারপর একটি নির্দিষ্ট দলের নির্দিষ্ট অফিসে যান। যার প্রধান এইচটি ইমাম।

সকলকে মনোবল শক্ত করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই সফল হব। দেশনেত্রীকে মুক্ত না করে আমরা নির্বাচনে যাব না। নির্বাচনের আগে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ইস্যুতে খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে সকলকে সাড়া দেয়ার কথা বলেন ফখরুল।বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, রফিক শিকদার, জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।