কারও মান ভাঙাতে যাবেন না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এখানে কে মান অভিমান করলো, কার মান ভাঙাতে যাবো, সেটা জানি না। সহানুভূতি দেখাতে গিয়ে যদি অপমানিত হয়ে ফিরে আসতে হয়, সেখানে আর যাওয়ার কোনও ইচ্ছা আমরা নেই।’ বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এ সংক্রান্ত এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে ফখরুল ইমাম তার প্রশ্নে বলেন,দেশে পলিটিক্যাল অভিমান চলছে।এটা কোনোক্রমেই রোহিঙ্গা সমস্যার থেকে কম নয়।এটা কীভাবে সমাধান করবেন, তা জানতে চাই।’ জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মান-অভিমান কোথায়, তা আমি জানি না। এটা নীতির প্রশ্ন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রশ্ন আর হচ্ছে আইনের প্রশ্ন। কেউ যদি অন্যায় করে, অর্থ আত্মসাৎ করে, চুরি করে, খুন করে, খুনের প্রচেষ্টা চালায়, গ্রেনেড ও বোমা মারে। তার বিচার হবে এটাই স্বাভাবিক।

যার যার আদর্শ নিয়ে সবাই রাজনীতি করে মন্তব্য করে সরকার প্রধান বলেন, দেশটা সবার। বিষয়টি এমন নয় যে, দেশটা আমাদের একার। যারা রাজনীতি করবেন,দেশের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই নিজেদের কর্মপন্থা ঠিক করবেন। সেই অনুযায়ী কাজ করবেন।

নিজের নীতি আদর্শের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নিজের স্বার্থে রাজনীতি করি না। নিজেদের লাভ- লোকসানের জন্য রাজনীতি করি না। লাভ- লোকসানের বিচার করি না। সেই হিসাবও করি না। হিসাব করি জনগণের জন্য কী করলাম। তাদের কতটুকু করতে পারলাম জনগণের জন্য রাজনীতি করি। সেভাবে পদক্ষেপ নেই এবং বাস্তবায়ন করি। আন্তরিক ও নিঃস্বার্থভাবে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি বলেই অল্প সময়ে এত উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি।আমার কাছে ব্যক্তির থেকে দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থটাই বড়। ব্যক্তিগত হিসাব-নিকাশ করি না। কতটুকু দিতে পারলাম, সেই হিসাবটা করি। কী পেলাম, কী পেলাম না, সেই হিসাব করি না। অতীতে তো অনেক সরকার ছিল। সেখানে দেশের থেকে ব্যক্তি-গোষ্ঠী বড় ছিল বলেই তারা উন্নতি করতে পারেনি। আমাদের কাছে সেটা কখনোই ছিল না।’

রাজধানীর যানজট কমাতে এবার পাতাল রেল করার পরিকল্পনার কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরইমধ্যে পাতাল রেল করতে সমীক্ষা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরকালে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম এ মালেকের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক এরইমধ্যে চার লেন করেই দিয়েছি। তাছাড়া এখন যত রাস্তা করা হচ্ছে, রাস্তার পাশে রিকশা, ভ্যান অন্যান্য ছোট যানবাহনের জন্য আলাদা রাস্তা করে দিচ্ছি। আরও পরিকল্পনা আছে। পুরো ঢাকা ঘিরে আমরা একটা রিং রোড তৈরি করব। যে রিং রোডটা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হবে। এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে টঙ্গি থেকে শুরু করে রায়ের বাজার হয়ে সদরঘাট হয়ে বালু নদীর পাড় দিয়ে পুরো ঢাকা ঘিরে রাখবে।

তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট সমস্ত জেলার সাথে যোগাযোগ স্থাপনে রাস্তাগুলো যেখানে চার লেন প্রয়োজন হবে সেখানে চার লেন করা হবে যেখানে ৬ লেন করার দরকার আমরা করব। আমাদের মহাপরিকল্পনা রয়েছে। তাছাড়া রেল নেটওয়ার্কও বাড়ানো হচ্ছে। একই সাথে আকাশ পথেও যোগাযোগ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এরইমধ্যে ৬টি বিমান কেনা হয়েছে। আগামী মাসে আরও একটি আসবে। আরও ৪টি কেনার পরিকল্পনা আছে।