প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করার অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)কে এম নুরুল হুদা বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

শনিবার বিকেলে ড.কামাল হোসেনের চিঠি নির্বাচন কমিশনে পৌঁছে দেন গণফোরামের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের পক্ষে একটি চিঠি তিনি আজ নির্বাচন কমিশনে পৌঁছে দিয়েছেন।

চিঠিতে ড. কামাল হোসেন বলেন, গত ১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সংলাপে বলেছেন, তফসিল ঘোষণার বিষয়টি একান্তভাবেই নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংলাপ অব্যাহত আছে। আওয়ামী লীগের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন যে, ৮ নভেম্বরের পরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপটি আবারও বিবেচনায় রয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আবারও সংলাপে বসার ব্যাপারে ইচ্ছুক।মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আপনারা (নির্বাচন কমিশন) জানিয়েছেন, ৪ নভেম্বর কমিশনের বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে ড. কামাল বলেছেন, আপনারা যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি অবগত আছেন এবং সেদিকে নজর রেখেছেন, সে প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করি যে, তফসিল ঘোষণার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি চলমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অপেক্ষা করাই শ্রেয়।

চিঠিতে ড. কামাল বলেন, তফসিল ঘোষণা নির্বাচনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তফসিল ঘোষণার পরই রাজনৈতিক দলগুলো এবং প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন। যেকোনো ধরনের নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা হলেন অন্যতম স্টেক হোল্ডার। তাদের কর্মকাণ্ড এবং কর্মসূচিকে আমলে নেওয়া নির্বাচন কমিশনের মৌলিক দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং একটি সম্ভাব্য রাজনৈতিক সমঝোতা একাদশ জাতীয় নির্বাচনসহ দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক গুণগত পরিবর্তন আনতে পারে। যা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য আপনাদের প্রচেষ্টাকেও সহায়তা করবে। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ শেষ হওয়ার পর তফসিল ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের অনুরোধ করছি।

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, তফসিল ঘোষণার দিনক্ষণ নির্ধারণে আপনাদের এমন অপেক্ষা রাজনৈতিক দল এবং জনগণের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।বহু আহ্বানের পর গত ১ নভেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে বেরিয়ে সংলাপ থেকে কোনো সমাধান পাননি বলে জানিয়েছিলেন জোটের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। আবারও সংলাপে বসার কথা জানিয়েছিলেন এই জোটের নেতারা।