সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ হার্বার্ট ওয়াকার (এইচ ডাব্লিউ) বুশ মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০ মিনিটে টেক্সাসের হাউস্টন শহরে নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ।

মৃত্যুকালে সিনিয়র বুশের বয়স হয়েছিলো ৯৪ বছর। চিকিৎসকরা জানান, বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ৪১তম প্রেসিডেন্টের। তবে তিনি বেশ আগে থেকেই পার্কিনসনস রোগে ভুগছিলেন। হাঁটার শক্তি হারানোয় তাকে চলাফেরা করতে হত হুইলচেয়ারে, নয়তো বৈদ্যুতিক স্কুটারে। শ্বাসতন্ত্রের জটিলতায় সাম্প্রতিক বছরগুলোকে তাকে বেশ কয়েক দফা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

জুনিয়র বুশের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিটি ঘোষণা করেন বুশ পরিবারের মুখপাত্র ম্যাকগ্রা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জেব, নিল, মারভিন, ডোরো এবং আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ৯৪ বছর বয়সে আমাদের বাবা মারা গেছেন। জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশ চমৎকার চরিত্রের অধিকারী ছিলেন এবং সন্তানদের জন্য ছিলেন সর্বোত্তম পিতা। পুরো বুশ পরিবার ৪১তম প্রেসিডেন্টের জীবন ও ভালোবাসার জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ, যারা তাদের পিতার জন্য প্রার্থনা করেছেন এবং তার বন্ধুসহ নাগরিকদের প্রতি জানাই সমবেদনা।’

এর আগে গত ১৭ এপ্রিল ৯২ বছরে বুশের স্ত্রী বারবারা বুশের মৃত্যু হয়। স্ত্রীর শেষকৃত্যের আগে তাকে হুইল চেয়ারে দেখা গিয়েছিল। এরপরই তাকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

১৯৬৪ সালে রাজনীতিতে প্রবেশের আগে তিনি ছিলেন টেক্সাসের একজন বিখ্যাত তেল ব্যবসায়ী। বৈমানিক হিসেবে তিনি অংশ নেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে।

জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৪১তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় ফার্স্ট লেডি হিসেবে হোয়াইট হাউসে ছিলেন বারবারা বুশ। পরে তার সন্তান জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০০ সালে ৪৩তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। দুই দফায় প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।

সিনিয়র বুশের শাসনামলেই রুশ-মার্কিন স্নায়ু যুদ্ধের অবসান ঘটে। একই সময় ইরাকের সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানও শুরু করেন তিনি। তার নির্দেশে, তেলসমৃদ্ধ দেশটিতে অভিযান শুরু করে মার্কিন জোট।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জাতিসংঘে বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাবেও যখন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেয়, তখন জাতিসংঘে মার্কিন প্রতিনিধি ছিলেন এই রাজনীতিক।