আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (১০ ডিসেম্বর) বিকালে গুলশানের বিএনপির চেয়ারপারসেন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

পাকিস্তান দূতাবাসে মির্জা ফখরুলের বৈঠক ও আইএসআই-এর সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহামনের বৈঠক হয়েছে বলে ওবায়দুল কাদের ও আব্দুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, এই বক্তব্য শুধুমাত্র বিএনপিকে হীনপ্রতিপন্ন করার জন্য। তাদের বক্তব্য প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের এই প্রবণতা আছে যে বিএনপিকে এমন সংস্থা বা দেশের সঙ্গে যুক্ত করে বিপদে ফেলতে চায়। আমরা সব সময় জনগণের মতামত নিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছি। কোনও সংস্থা বা দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই।

সরকার পরিকল্পিত ও সুচিন্তিতভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপ্রচারে মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকারি অর্থ ব্যয় করে তারা এই জঘন্য মিথ্যাচারের জন্য সোশ্যাল ও প্রিন্ট মিড়িয়াকে ব্যবহার করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তিনশ’র বেশি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলেছে। যার একমাত্র উদ্দেশ্য বিরোধী দল ও খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপ্রচার করা, নোংরা ছবি ছড়ানো এবং মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প তুলে ধরা।প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা ড. কামাল হোসনকে নিয়ে একটি কার্টুন দেখিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, কার্টুনকে আমি কিছু মনে করি না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী বা আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে এই ধরনের কার্টুন দেওয়াতে অনেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৭ বছর জেলও হয়েছে। আমাদের অনেক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টকেও জেলে রাখা হয়েছে।

বিএনপির নেতাদের ছবি নিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ধরনের চরিত্রহনন ও অপ্রচারের বিরুদ্ধে কোনও মামলা হয়নি। আমরা এখন থেকে মামলা করা শুরু করবো। দেখবো সরকার সেইগুলোর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে।এসময় তিনি সব অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টের মুক্তি দাবি করেন।মিড়িয়াকে নিরপেক্ষ আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কিছু নেতা মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে বিক্ষোভ করলে সেইগুলো বড় করে ছাপা হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের নিজের দ্বন্দ্বে অনেক খুন হলেও মিড়িয়া তাদেরটা ফলাও করে প্রচার করে না।তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে দেশ গণতান্ত্রিক থাকবে কি থাকবে না। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের প্রচার থেকে শুরু করে মিড়িয়ার ও সোশ্যাল মিড়িয়ার প্রচারণায় কোনও সমতল ভূমি নেই। আমরা ভয়াবহ প্রতিকূলতা ও খানাখন্দে ভরা অসমতল ভূমিতে নির্বাচনে করতে যাচ্ছি। এখন আগের মতো মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। এক্ষেত্রে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা হচ্ছে।৫৮টি অনলাইন পোর্টাল বন্ধের সুপারিশের নিন্দা জানান মির্জা ফখরুল। এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই আমরা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিল করবো।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রমুখ।