আমাদের গৌরব বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তারা শান্তির জন্য কাজ করছে। সংঘাতময় দেশে শান্তি স্থাপন করতে গিয়ে অনেক প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে। এজন্য তাঁরা দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনছে। আমরা এই শান্তিরক্ষী সেনাসহ শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত/মৃত্যুবরনকারী দেশের সকল শান্তি সেনা ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের রুহের মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করছি। আজ ২৩ ডিসেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বেনিন শহীদ শান্তিসেনা দিবস’ এর ১৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে স্মরণসভা অনুষ্ঠানে সিএলএনবি’র সভাপতি হারুনূর রশিদের সভাপতিত্বে বক্তাগণ উল্লেখিত বক্তব্য রাখেন।

সিএলএনবি ও পিসকিপার্স মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ (প্রস্তাবিত) আয়োজিত স্মরণ সভা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শ্রমজীবি ও শিল্প রক্ষা আন্দোলন নেতা হারুনার রশিদ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য নারগিস জাহান বানু, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, সদস্য সচিব হিফজুর রহমান, শ্রমিক নেতা বজলুর রহমান বাবলু, কামরুন নাহার, মাহাতাব উদ্দিন শহীদ, সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবি কে.এম জাবির, নারী নেত্রী জান্নাত ফাতেমা, শেফালী বেগম, সাবেক ছাত্রনেতা হাসান মঞ্জুর, হারুন লস্কর, যুবনেতা মোঃ হানিফ, হুমায়ন কবির প্রমুখ।

বেনিন শহীদ শান্তিসেনা দিবস ১৫ তম বর্ষপূর্তি। ২০০৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতে (বাংলাদেশ সময় ২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশ লাইবেরিয়া ও সিয়েরালিওন থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন সমাপ্ত করে দেশে ফেরার পথে বেনিন সাগর উপকূলে এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন বাংলাদেশের ১৫ সেনা কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত অবস্থায় বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ এর এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক শান্তি সেনাকর্মী আত্মত্যাগ করেছেন। এই আত্মদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশের শান্তি রক্ষা মিশন দ্যাগ হেমারসোল্ড (উধম ঐধসসধৎংশলড়ষফ) জাতিসংঘ শান্তি পুরস্কার লাভ করেছে। দেশের শহীদ শান্তি সেনাদের স্মরনে ঢাকার কোন একটি রাস্তা বা উড়াল সেতুকে তাদের নামে উৎসর্গ করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাই।

বেনিনে দুর্ঘটনায় নিহত সেনা কর্মকর্তারা হলেন লেঃ কর্নেল আরেফিন, মেজর রওনক, মেজর রহিম, মেজর মুস্তাফিজ, মেজর মোশাররফ, মেজর ইমতিয়াজ, মেজর বাতেন, ক্যাপ্টেন আব্দুল মাবুদ, ক্যাপ্টেন রাকিব, ক্যাপ্টেন আরিফ, ক্যাপ্টেন রফিক, ক্যাপ্টেন ফরিদ, ক্যাপ্টেন জাহিদ, ক্যাপ্টেন আলাউদ্দিন ও সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার শফিক।

বক্তাগণ আরো বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশের আত্মত্যাগী বিশাল অবদান তাঁদেরকে বিশ্বের শীর্ষ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে পরিনত করেছে এবং একই সাথে তাঁদের পরিশ্রমে অর্জিত অর্থ বাংলাদেশের ৩য় বৃহত্তম আয়ের খাতে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সমস্যাসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন সংশ্লিষ্ট দেশগুলি বাংলাদেশকে অকুন্ঠ সমর্থন করে আমাদের দেশকে বিশ্ব নেতৃত্বের আসন করে দিয়েছে।