ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপার্থী আতিকুল ইসলাম এর সমর্থনে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা আজ 25/02/2019ইং তারিখ রোজ সোমবার বিকাল 3 টায় বাউনিয়া মোড় পল্লবীতে পথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধান অতিথি যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নানা দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচন কেবলমাত্র একজন ব্যক্তির নির্বাচন নয় বা একটি এলাকার নির্বাচন নয়। এই নির্বাচনটি হলো রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার যে দর্শন জনগণের ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়ন অভিযাত্রার পক্ষে একটি ম্যান্ডেট। সারা বাংলাদেশে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে দেশের জনগণ উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বের পক্ষে রায় দিয়েছে। সেই ধারাকে অব্যাহতভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ঢাকা উত্তরেও শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীর বিজয় প্রয়োজন। কারণ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনি এলাকা। একদিকে যেমন রয়েছে দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরা এই এলাকার ভোটার তেমনিভাবে ঢাকা শহরের সবচেয়ে হতদরিদ্র বস্তিবাসী এই এলাকায় বাস করে। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছে যে, ২০৪১ সালের মধ্যে বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূর করে আধুনিক উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মান করা হবে, সেই অঙ্গীকার পূরণের জন্য ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জয় পাওয়া অনিবার্য। এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার যে, আতিকুল ইসলাম কোনো ব্যক্তি নন, তিনি কে বা কী সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় না। আমাদের বিবেচ্য বিষয় হলো একটাই যে, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আর রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেন, তিনিই তার চিন্তা চেতনা এবং দর্শনের ধারক-বাহক। এবং তার মাধ্যমেই ওই এলাকায় রাষ্ট্র নায়ক শেখ হাসিনার স্বপ্নযাত্রার বাস্তবায়ন ঘটে। এই নির্বাচন একদিকে যেমন আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের মূল চেতনা বাস্তবায়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একইভাবে তারুণ্যের যে অঙ্গীকার সেটা বাস্তবায়নের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ২১টি অঙ্গীকার করা হয়েছে। তার মধ্যে একটা বড় অঙ্গীকার হলো দারিদ্র্য নির্মূল। আমরা জানি যে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে অনেক গুলো বস্তি রয়েছে, অনেক দরিদ্র্য মানুষ রয়েছে। এই দরিদ্র বস্তিবাসীদের জীবনমান উন্নয়ন করা আমাদের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা অঙ্গীকার করেছেন যে, ২০২১ সালের মধ্যে তিনি দারিদ্র্যের হার পাঁচ শতাংশে নামিয়ে আনবেন। এটা তার নির্বাচনি ইশতেহারের অন্যতম অঙ্গীকার। এতা করতে গেলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার পথনির্দেশনা এবং তার পরামর্শ ছাড়া এই দারিদ্র্য বিমোচন অসম্ভব ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আতিকুল ইসলামকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তাকে যদি আমরা নির্বাচিত করতে পারি তবে তিনিই রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসেবে দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ যুব তারুণ্য নিয়ে কাজ করে এবং ২০১৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার করা হয়েছে। সে অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন করতে গেলে ঢাকা উত্তর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা। ঢাকা শহরের দুটি সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে ঢাকা উত্তরেই তরুনদের সংখ্যা বেশি। এটা সর্বোজনবিদিত যে, ঢাকার তরুনরা যা ভাবে, ঢাকার তরুণরা যা চিন্তা করে সেটাই সারাদেশের তরুণ-যুবকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আমরা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে দেখেছি যেটা শুরু হয়েছিল ঢাকা থেকে। ৭১ এর মক্তি সংগ্রামে দেখেছি যে, ঢাকার যুবক তরুণরাই প্রথম অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল। কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই মুক্তিযুদ্ধ করেছিল তারা। ঢাকার তরুণদের পথ অনুসরণ করেই সারা দেশের তরুণরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। প্রত্যাকটা সংকটের সময় দেখা গেছে যে, যুবক তরুণদের যে স্ফুরণ ঘতে সেটা ঢাকা থেকেই শুরু হয়। সেজন্য আমরা মনে করি, তরুণদের কল্যাণে যে, লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে দিয়েছে তা বাস্তবায়ন করার জন্য ঢাকা উত্তর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। এখানে তরুণদের যদি আমরা সংগঠিত করতে পারি তাহলে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন সহজ হবে। এজন্য আমরা ঢাকা উত্তরে যিনি মেয়র পদে দাড়িয়েছেন তাকে আমরা অনুরোধ করছি যে, আপনি যদি নির্বাচনে বিজয়ী হন তাহলে আওয়ামী লীগ ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহার সামনে রাখবেন। এই ইশতেহারে যুব ও তরুণদের জন্য যা যা অঙ্গীকার তা পূরণের জন্য সরকারের সাথে মিলে আপনাকেও কাজ করতে হবে। যেমন এই ইশতেহারে বলা হয়েছে যে, আলাদা যুব বিভাগ গড়া হবে। এই যুব বিভাগ মন্ত্রণালয়ে যেমন করা দরকার, তেমনি সিটি কর্পোরেশনেও এটা দরকার। আমরা মনে করি যে সিটি কর্পোরেশন তো একটা ক্ষুদ্র সরকার। এজন্য আমরা অনুরোধ করবো যে, ঢাকা উত্তরের নির্বাচনে যদি আপনি জয়ী হন তবে এখানে সিটি কর্পোরেশনের আওতায় একটা যুব বিভাগ করবেন।
নির্বাচনী ইশতেহারে জাতীয় বাজেটে যুবকদের জন্যে আর্থিক বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। আমরা মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের কাছে অনুরোধ করবো, সিটি কর্পোরেশনের বাজেটে যেন যুব সমাজের জন্য আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়।

নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের জন্য যুব গবেষণা কেন্দ্র গড়ার কথা বলে হয়েছে। জাতীয়ভাবে যেমন এটা করা যায়, ঠিক তেমনি সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগেও এটা করা যায়। আমরা ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তরের মেয়র পদপ্রার্থীকে অনুরোধ করবো নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি যেন যুবক তরুণদের মেধা মননের বিকাশ ঘটানোর জন্য একটা যুব গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করে। একই সঙ্গে আমরা অনুরোধ করবো যে, কারিগরি শিক্ষা ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে অধিকতর প্রশিক্ষণের যেন সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করে সিটি কর্পোরেশন।
ঢাকা উত্তর এলাকায় বেশকিছু উচ্চ শিক্ষাকেন্দ্র, বিশেষ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আশা করি যে, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তর এরকম উদ্যোগ নেবে যে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে যে তরুণরা পড়াশুনা করছে, তাদের যেন আর্থিক ব্যাংক ঋণ এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন উদ্যোগ গ্রহণ করে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যেমন অঙ্গীকার করেছেন যে তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি চালু করবেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনও এরকম একটি পাইলট কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারে, যাতে করে তরুণরা কর্মক্ষেত্র এবং আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ পায়।

এই সমস্ত বিষয়গুলোর দিকে দৃষ্টি আকর্ষন করে আমরা মনে করি যে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে একটা যুববান্ধব সিটি কর্পোরেশন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের মেয়র পদপ্রার্থী অঙ্গীকার করবেন। এবং শুধু অঙ্গীকারই নয়, নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি তা বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নেবেন। যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন এর পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো: হারুনুর রশীদ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সহ সভাপতি কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক, জাফর ইকবাল, যুগ্ম সম্পাদক তাসভীরুল হক অনু, হারুর অর রশীদ, আলতাফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল উদ্দিন আহম্মেদ, সিদ্দিক বিশ্বাস, শাহাদাত হোসেন সেলিম, দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ প্রমুখ।