খেলার উন্নতির জন্য দেশের প্রায় পাঁচশ উপজেলার প্রতিটিতে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।

বৃহস্পতিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গামাতা গোল্ডকাপের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে একথা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, ফুটবল একটা জনপ্রিয় খেলা। এই খেলার যেন আরও উন্নতি হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

আমরা প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করে দিচ্ছি। যাতে সব সময় আমাদের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা প্র্যাকটিস করতে পারে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি তৈরি হয়ে গেছে, আরও কতগুলো হবে।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রবর্তন করে।

২০১৮ সালের দুই টুর্নামেন্টের ফাইনাল হয় বৃহস্পতিবার। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ কাপ জিতেছে সিলেটের হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ জিতেছে ময়মনসিংহের পাঁচরুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

শেখ হাসিনা দুটি টুর্নমেন্টের বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়ার আগে স্টেডিয়ামে বসে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনাল খেলা দেখেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছে ৬৫ হাজার ৭০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় আর খেলোয়াড়ের সংখ্যা ১১ লক্ষ ১৬ হাজার ৯০০; আর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় এই টুর্নামেন্ট ৬৫ হাজার ৭৯০টা বিদ্যালয় অংশগ্রহণ করেছে, আর খেলোয়াড় ১১ লক্ষ ১৮ হাজার ৫১৫।

বাংলাদেশ বিশ্বে একটা ইতিহাস সুষ্টি করেছে আমার মনে হয়। পৃথিবীতে আর কোনো দেশে এই ইতিহাস নেই। এত বিশাল সংখ্যায় টুর্নামেন্ট খেলা বা এত খেলোয়াড় আমার মনে হয় পৃথিবীর আর কোনো দেশ কোথাও আয়োজন করতে পারে নাই।

এই দুটি টুর্নামেন্ট চালুর সুফল তুলে ধরতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নারী অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব- ১৮ ও জাতীয় দলে ৫০ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে ৩৬ জন খেলোয়াড় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক ফুটবল টুর্নামেন্ট থেকে এসেছে।

ধীরে ধীরে তারা জাতীয় পর্যায়ে তাদের অবস্থান করে নিচ্ছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে।

ফুটবলের সঙ্গে পারিবারিক সম্পৃক্ততা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের পরিবারের সদস্যরা ফুটবল খেলার সাথে জড়িত। কাজেই এই খেলার প্রতি আমাদের একটা আলাদা আন্তরিকতা আছে।

আমার দাদা, তিনি ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মৃজিব, তিনিও ফুটবল খেলতেন। আমার ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল সবাই ফুটবল খেলত।

এখন আমার নাতি-নাতনিরাও ফুটবল খেলে। জয়ের মেয়ে ফুটবল খেলে, পৃতুলের ছেলে-মেয়েরা ফুটবল খেলে, এমনকি রেহানার ছেলে ববি, তার ছেলে-মেয়ে, তারাও ফুটবল খেলে।

বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম বেগবান করতে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অবদানের কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলা করবে, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা করবে। তাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, মন ভালো থাকবে। তারা ডিসিপ্লিন শিখবে এবং আগামী দিনে এই বাংলাদেশকে তারা নেতৃত্ব দেবে। সেটাই আমরা চাই । সেই জন্যই আমরা এই ধরনের আয়োজন করি।

আজকে যারা খেলাধুলায় পারদর্শিতা দেখাচ্ছে, আগামী দিনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তারা আরও সম্মান আমাদের জন্য বয়ে আনবে, সেটাই আমরা আশা করি।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এই অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ওই উপস্থিত ছিলেন।