ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী এবং তাদের সহযোগীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন থেকে জালিয়াতি করে যারা ভর্তি হয়েছে তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো চোর-বাটপারদের জায়গা হতে পারে না। টাকা দিয়ে পড়ার জন্য বড় বড় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেধাবীদের বিশ্ববিদ্যালয়।’ তিনি অবিলম্বে জালিয়াতদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে ভর্তি হয়ে সুনাম ক্ষুন্ন করেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য সবসময় দায়সারা বক্তব্য দিয়েছেন, কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেননি। জালিয়াতির ঘটনা আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছ থেকে পায়নি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে জালিয়াতির ঘটনা উঠে এসেছে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্বলতা। কালক্ষেপণ না করে যারা জালিয়াতি করে ভর্তি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের আজীবনের বহিষ্কারের দাবি জানান নুর।

স্বতন্ত্র জোটের নেতা অরণী সেমন্তি খান বলেন, প্রশাসন একজন শিক্ষার্থী যথাসময়ে ক্লাসে আসতে না পারলে হয়রানি করে, অসুস্থতাজনিত কারণে ক্লাস না করতে পারলে ডিসকলেজিয়েট করে। কিন্তু যারা নকল করে প্রশ্ন কিনে ভর্তি হয় তাদের বিরুদ্ধে এই প্রশাসন একটি কথাও বলে না। এই প্রশাসনকে ধিক জানানো ছাড়া আমাদের কোনো ভাষা বাকি থাকে না। জালিয়াতি করে যারা ভর্তি হয়েছে পড়ালেখা শেষে তারা যদি সামনের কাতারে যায় তাহলে দেশটাকে ধ্বংস করে দেবে। আমাদেরকে এখনই সময় জালিয়াতিদের রুখে দেওয়ার।

প্রশাসনকে চেপে না ধরলে তারা কাজ করবে না মন্তব্য করে অরণী সেমন্তি খান শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বরাবর স্মারকলিপি দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক আখতার হোসেন।

স্মারকলিপি দেওয়ার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির আগেই এটা আমরা শুরু করেছি। কোনো অনিয়মতান্ত্রিকতার স্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। দায়িত্বভার গ্রহণের পর আমরা এটি শক্তভাবে গ্রহণ করি। আমরা ডিজিটাল জালিয়াতি চিহ্নিত করেছি। এটা একটি বড় চক্র হওয়ার কারণে আমরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা নিচ্ছি। যখন তাদের তরফ থেকে যথার্থ তথ্য প্রমাণ পায় আমরা তখন সেগুলো ডিসিপ্লিনবোর্ডে দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া যেটা অব্যাহত আছে।

তথ্য প্রমাণ সাপেক্ষে যারা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান উপাচার্য।