ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার প্রতিবাদী ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ফেনী জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির কাজ শেষ হয়নি তিন সপ্তাহেও। এরই মধ্যে তিন দফায় তদন্ত কাজ শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। মাদরাসা পরিচালানা কমিটির সভাপতি ও ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পিকেএম এনামুল করিমকে এই কমিটির প্রধান রাখায় সঠিক তদন্ত নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। রাফির স্বজনরা এরই মধ্যে এনামুল করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, নিপীড়নের ঘটনার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি অভিযুক্ত এস.এম সিরাজ উদ দৌলার পক্ষ নিয়েছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২৭ মার্চ রাফিকে যৌন নিপীড়ন করার ঘটনায় মামলা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টার ভবনের তিনতলার ছাদে নিয়ে রাফির গায়ে আগুন দেওয়া হয়। পরদিন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পি কে এম এনামুল করিমকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে জেলা প্রশাসন। ওই কমিটিতে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্যাহকে সদস্য করা হয়। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান। তিন কার্যদিবস শেষ হলেও কাজ শুরুই করতে পারেননি তিনি। এরপর ১০ এপ্রিল বুধবার জেলা প্রশাসক বরাবর তদন্ত কমিটির প্রধান এনামুল করিম আরো সাত দিন সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। পরে জেলা প্রশাসক সাত কার্যদিবস মেয়াদ বাড়ান। সে মেয়াদে প্রতিবেদন তৈরি করতে না পারায় কমিটি আরো সময় বাড়ানোর আবেদন করে। জেলা প্রশাসক আরো চার দিন সময় বাড়ান, যে মেয়াদ শেষ হয়েছে ২১ এপ্রিল। তবে লক্ষণীয় যে আজ ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে নি।

এ ব্যাপারে কমিটির প্রধান পি কে এম এনামুল করিম বলেন, তদন্ত কাজ শেষ করা হলেও নানা ব্যস্ততায় প্রতিবেদন তৈরি এখনো সম্ভব হয়নি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিবেদন তৈরি করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, তদন্ত দলের প্রধান একটি প্রশিক্ষণে জেলার বাইরে অবস্থান করায় কিছুটা দেরি হচ্ছে। অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন তৈরি করে গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে জানানো হবে।