গ্রিনলাইন পরিবহনের বাস চাপায় পা হারানো প্রাইভেট কার চালক রাসেল সরকারকে আগামী ২২ মের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ সময় আদালত বলেছেন, রাসেলকে আরো টাকা দিন। তা না হলে কী করতে হবে তা আমরা জানি। আদালত বলেন, আপনাদের ব্যবসাতো বন্ধ নেই। আমরা কি রিসিভার নিয়োগ করে দেবো?বুধবার (১৫ মে) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আজ এ মামলার শুনানির সময় গ্রিনলাইন পরিবহনের পক্ষের আইনজীবী অজি উল্লাহ বলেন, আমরা সময় চেয়েছি। তখন আদালত বলেন, একবার চাইলেন, সময় তো দিলাম। চার আনা পয়সাও পরিশোধ করেননি। আপনাদের (গ্রিনলাইন) কি ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে? আমরা কি রিসিভার নিয়োগ দিয়ে দিবো? একেবারে খালি হাতে চলে আসলেন। এটা কি করে হয়! সামনে কোর্টের অবকাশ (ভ্যাকেশন) আছে। তার আগে আদেশ পালন(কমপ্লাই) করেন। ২২ মে তারিখ রাখলাম। চিকিৎসার খরচতো দিবেনই। যদি পার্ট হয় (আংশিক) তাও দেন।

আদালতে গ্রিনলাইন পরিবহনে পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. অজি উল্লাহ ও রিট আবেদনকারীপক্ষে ছিলেন খোন্দকার শামসুল হক রেজা।

শুনানির সময় রাসেলের আইনজীবী শামসুল হক রেজা বলেন, আদালতের আদেশের পর এককালিন ৫ লাখ টাকা ও চিকিৎসার জন্য ৩ লাখ টাকা দিয়েছে গ্রীনলাইন। বাকী ৪৫ লাখ টাকা একমাসের মধ্যে দেওয়ার কথা। কিন্তু আর কোনো টাকা দেয়নি।এরপর গ্রিনলাইন পরিবহনে পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. অজি উল্লাহ আদেশ বাস্তবায়নের জন্য একমাস সময় চান।এসময় আদালত বলেন, আপনারা ৫ লাখ টাকা দিয়েছেন। বাকী টাকা (৪৫ লাখ) একমাসের মধ্যে দেওয়ার কথা। খালি হাতে চলে এসেছেন। আদেশ বাস্তবায়ন করে আসতেন। কিছু টাকা দিতেন। কিন্তু আর একটাকাও দিলেন না। এটা কি হয়? আদেশ যদি বাস্তবায়ন না করেন তবে কি করতে হয় তা আমরা জানি। এছাড়াও চিকিৎসা খরচও দেবেন। আমরা আপনার সমস্যাও দেখছি।

২০১৮ সালের ১৪ মে রাসেলকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

ওই বছরের ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটির জেরে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচালক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাইভেটকার চালকের ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারের (২৩) বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শঙ্কায় পড়ে তার জীবন। গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এলাকার বাসিন্দা পা হারানো রাসেল সরকার রাজধানীর আদাবর এলাকার সুনিবিড় হাউজিংয়ে থাকতেন। তিনি স্থানীয় একটি রেন্ট-এ-কার প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতেন।