দুর্ভোগ নিরসনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষের আশ্বাস বাস্তবায়ন না হওয়ায় আবারও আন্দোলনে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা পাঁচ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন।

শনিবার (৬ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা পাঁচ দাবি পুনরুত্থাপন করেন এবং অনিশ্চিত ক্যারিয়ার থেকে উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।আন্দোলনে রয়েছেন ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীরা

আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবু বকর বলেন, সময়মতো পরীক্ষা না নেওয়া, ফলাফল প্রকাশে সাত থেকে আট মাস বিলম্ব করা, বিনা নোটিশে নতুন নিয়ম কার্যকর, একই বিষয়ে গণহারে ফেল, খাতার সঠিক মূল্যায়ন না হওয়া, সিলেবাস বহির্ভূত প্রশ্নপদ্ধতিসহ নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও এ সমস্যার সমাধান হয়নি। ঢাবি কর্তৃপক্ষ বারবার সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও তার ফল পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। আমাদের দাবি আদায় না হওয়ায় এবং অনিশ্চিত ক্যারিয়ার থেকে উদ্ধার পেতে আমরা আবার রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শাকিল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই সাত কলেজে নেমে আসে কালো অধ্যায়। দীর্ঘ নয় মাস সাত কলেজের কার্যক্রম বন্ধ থাকার পরিপ্রেক্ষিতে মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচি হলে তারা কার্যক্রম শুরু করে। কিছুদিন চলার পর ফের আগের অবস্থায় ফিরে যায় সাত কলেজ। এর পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনের নামি আমরা। এই আন্দোলনের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেয়, আমরা আন্দোলন স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে যাই। কিন্তু প্রকাশিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কলেজের কাজ বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা আমাদের অনিশ্চিত শিক্ষাজীবন নিয়ে হতাশ। এমতাবস্থায় আমাদের অধিভুক্ত কলেজের বিষয়ে কোনো আশ্বাস নয়, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান চাই। আমরা হতাশ, তবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রাখতে চাই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোনো মিথ্যা আশ্বাস আমরা শুনতে চাই না।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো:
১. ফলাফল প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে সব বিভাগের ত্রুটিমুক্ত ফল প্রকাশ করা।
২. অনার্স, মাস্টার্স, ডিগ্রির সব বর্ষের ফলাফলে অকৃতকার্য হওয়ার কারণ প্রকাশসহ খাতার পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।
৩. সাত কলেজ পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ।
৪. সিলেবাস অনুযায়ী মানসম্মত প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্পূণরূপে সাত কলেজের শিক্ষকের মাধ্যমে করতে হবে।

৫. সেশনজট নিরসনে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশসহ ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করতে হবে।