লালমনিরহাটে মহাসড়কের দু’ধারের জীবন্ত বড় বড় গাছগুলো কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব নামে এক আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে। প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই গাছ কাটা হচ্ছে বলে ঐ নেতার দাবী করলেও জেলা প্রশাসক বলেন জীবন্ত গাছ তো নয়, ওই সড়কের মৃত গাছ কাটারও আপাতত কোন অনুমতি দেয়া হয়নি।

রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) সকালে লালমনিরহাট বড়বাড়ী মহাসড়কের সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর এলাকায় এসব গাছ কাটতে দেখা যায়। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) থেকে শুরু হয়েছে এ গাছ কাটার ধুম।

তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব লালমনিরহাট জেলা পরিষদ সদস্য ও সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি।

স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের উপর দিয়ে যাওয়া লালমনিরহাট রংপুর মহাসড়কের উপর দু’ধারে লাগানো কড়াই গাছগুলো বিশাল বিশাল আকার ধারন করেছে। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি মহাসড়কটির সৌন্দর্য বর্ধনেও ব্যাপক ভুমিকা রাখছে এসব গাছ। গত শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সকাল থেকে মহাসড়কটির মহেন্দ্রনগর থেকে বড়বাড়ী অংশের গাছগুলো কেটে ফেলেন স্থানীয় মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব। স্থানীয়রা বাঁধা দিলে তাদেরকে জানানো হয় জেলা পরিষদের পুরাতন হলরুমের আসবাবপত্র মেরামত করতে প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই গাছগুলো কাটা হচ্ছে। প্রথম দিন ৪টি গাছের কথা বলা হলেও গত তিন দিনে প্রায় ৮/১০টি গাছ কাটা হয়েছে। এরপরও থেমে থাকেনি গাছকাটা মহোৎসব।

গাছ কাটার কাজে নিয়োজিত করাত মিস্ত্রীদের কাছে জানতে চাইলে তারাও স্বীকার করেন জেলা পরিষদ সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লবের ডাকে তারা শ্রমিক হিসেবে গাছ কাটছেন। কর্তনকৃত এসব গাছের মুল্য প্রায় ৭/৮ লাখ টাকা।

স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী সূফী মোহাম্মদ বলেন, মহাসড়কটির গাছগুলো সড়কটিতে বেশ শোভা বর্ধন করে বীরদর্পে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছিল। প্রায় সময় বিভিন্ন অজুহাতে মহেন্দ্রনগর এলাকার জীবনন্ত গাছগুলো কেটে সাবাড় করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব। সড়কটি আর আগের মত সৌন্দর্য বর্ধন করে না। অবশিষ্ট্য যে কয়েকটি গাছ দাঁড়িয়েছিল সেটাও কেটে নিতে নতুন মিশনে নেমেছেন এ নেতা। এ কারনে তাকে স্থানীয়রা গাছকাটা নেতা বলেও জানেন। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

জেলা পরিষদ সদস্য মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব গাছ কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দরপত্র না হলেও জেলা পরিষদের পুরাতন হলরুমের আসবাবপত্র মেরামত করতে কিছু কাঠের প্রয়োজন। তাই জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের অনুমতি স্বাপেক্ষে ৪/৫টি গাছ কাটা হচ্ছে। পুরাতন হলরুম মেরামতের জন্য দেয়া বরাদ্ধ পর্যাপ্ত না হওয়ায় এসব গাছ কর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর বলেন, জীবন্ত গাছ তো নয়, ওই সড়কের মৃত গাছ কাটারও আপাতত কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।