ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরা উপকূলের জেলেরা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের পরও মেঘনায় মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন জেলেরা। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মেঘনা পাড়ের বিভিন্ন ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনায় হাজার হাজার জেলে নৌকা নিয়ে মাছ শিকারে ব্যস্ত। মৎস্য ঘাটের আড়তগুলোও রয়েছে খোলা। আজ সকাল থেকে মনপুরা উপজেলা চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বশির আহমেদ মাইকিং করে মেঘনা পাড়ের মানুষদের সর্তক করেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, জেলে প্রতিনিধিসহ সামাজের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে। উপজেলা পর্যায়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন চরে অবস্থানরত সব মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আজ সকাল থেকে উপকূলের বিভিন্ন বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা থাকলেও দুপুর ১টা পর্যন্ত কোনো মানুষ সেখানে আসেনি। এদিকে বিচ্ছিন্ন চরনিজাম ও কলাতলীর চরে অবস্থানরত ২০ হাজার মানুষ দুপুর পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে এসে পৌঁছায়নি। সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিসহ হাওয়া বইছে।

চরনিজাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নুরনবী জানান, রাতে রেডক্রিসেন্ট সদস্যসহ মসজিদে মসজিদে মাইকিং করা হয়েছে। তারপরও মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসছে না। একই অবস্থা বিছিন্ন কলাতলীরচরে।

ইউএনও বশির আহমেদ জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে খিচুড়ির আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া কলাতলীর চর ও চরনিজামে অবস্থানরত স্থানীয়দের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নদীতে মাছ ধরা থেকে ফিরে আনার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র কারণে মোংলা ও পায়রা বন্দরে দেওয়া হয়েছে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। এ ছাড়া উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে ৭ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।