গাজীপুরের কালীগঞ্জে মোবাইল চুরির দায়ে এক মাদ্রাসার শিক্ষককে চড় দেওয়ায় ওই মাদ্রাসার প্রিন্সিপালের শিশু সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের লাশ ওই শিক্ষকের কক্ষের কেবিনেট থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষক ও মোয়াজ্জিনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের নাম আহনাফ হোসেন আদিল (৪)। সে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার দশালিয়া গ্রামের মুফতি জুবায়ের আহমেদ শাহিনের ছেলে।

নিহতের বাবা ও এলাকাবাসী জানান, মুফতি জুবায়ের আহমেদ শাহিন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের মরাশ বাগ এলাকার জান্নাত আরাবিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রিন্সিপাল এবং একই মাদ্রাসার মসজিদের ইমাম ও খতিব। তিনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে মাদ্রাসা ক্যাম্পাসের একটি বাসায় বসবাস করেন। গত মঙ্গলবার ওই মাদ্রাসা মসজিদের মোয়াজ্জিন মো. খাইরুল ইসলামের একটি মোবাইল ফোন চুরি যায়। মোবাইল চুরির দায়ে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক জুনায়েদ আহমেদকে চড় থাপ্পর দেন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল জুবায়ের আহমেদ। এতে ক্ষুব্ধ হয় শিক্ষক জুনায়েদ। এ ঘটনার পরদিন বুধবার বিকেলে প্রিন্সিপাল জুবায়ের আহমেদের শিশু সন্তান আহনাফ হোসেন আদিল বাসা থেকে বের হয়ে মাদ্রাসার মাঠে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এলাকাবাসী বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে মাদ্রাসার শিক্ষক জুনায়েদ আহমেদ ও ওই মাদ্রাসা মসজিদের মোয়াজ্জিন খাইরুল ইসলামের আচরণে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। এলাকাবাসী তল্লাশীর জন্য জুনায়েদের কাছে তার কক্ষের চাবি চাইলে তিনি দিতে অস্বীকার করেন। এসময় এলাকাবাসীর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মোবাইল চুরির দায়ে চড় দেওয়ায় শিশু আদিলকে গলাটিপে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে জুনায়েদ ও খাইরুল।

কালীগঞ্জ ওসি এ.কে.এম. মিজানুল হক জানান, শিশু খুন হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ বুধবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে জুনায়েদ ও খাইরুল নামের দু’জনকে আটক করে। এসময় আটককৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক জুনায়েদ আহমেদের কক্ষে কাপড় রাখার কেবিনেটে লুকিয়ে রাখা নিখোঁজ আদিলের লাশ উদ্ধার করে। নিহতের গলায় কালো দাগ রয়েছে। আটককৃত জুনায়েদ আহমেদ (৩০) হবিগঞ্জ জেলার রাখাইন উপজেলার তেগুরিয়া গ্রামের মৃত ওয়াহাব আলীর ছেলে এবং খাইরুল ইসলাম (২৫) একই এলাকার জফু মিয়ার ছেলে। এদের মধ্যে জুনায়েদ আহমেদ মরাশ বাগে জান্নাত আরাবিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার সহকারী শিক্ষক এবং খাইরুল ইসলাম ওই মাদ্রাসার মসজিদের মোয়াজ্জিন।

বৃহষ্পতিবার নিহতের লাশের ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।