গাজীপুর জেলাকে শনিবার হতে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গাজীপুর জেলাকে অবরুদ্ধ ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম।

গাজীপুর জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি মোকাবেলায় ও জরুরী সুরক্ষার প্রয়োজনে গাজীপুর জেলায় জনসাধারণের প্রবেশ ও প্রস্থান নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গাজীপুরকে অবরুদ্ধ করার ঘোষণা শনিবার গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধের লক্ষ্যে গঠিত গাজীপুর জেলা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে গাজীপুর জেলাকে ১১ এপ্রিল (শনিবার) হতে অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশ বলবৎ থাকবে। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে শনিবার (১১ এপ্রিল) এ জেলায় জনসাধারণের প্রবেশ ও প্রস্থান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অন্য জেলা হতে পার্শ্ববর্তী জেলায় গমনের উদ্দেশ্যে ট্রানজিট হিসেবে জাতীয় মহাসড়ক ব্যবহার ব্যতীত জেলা ও উপজেলার যেকোন সীমানা দিয়ে প্রবেশ ও প্রস্থানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। নৌপথেও এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

এসময়ে সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠাণ, গণজমায়েত, গণপরিবহন এবং দিনরাতে জনসাধারণের চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরী পরিসেবা, চিকিৎসা সেবা, কৃষিপণ্য ও খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ, সংগ্রহ, উৎপাদন ও পরিবহন ইত্যাদি এ নিষেধাজ্ঞা এর আওতা বহির্ভুত থাকবে। জনস্বার্থে জারীকৃত এ আদেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ওই গণ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

গাজীপুরের সিভিল সার্জন মোঃ খায়রুজ্জামান জানান, জেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার বিকেলে ওই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, লকডাউন চলাকালে কাঁচা বাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান সকাল ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকলেও অন্যসকল দোকান পাট বন্ধ থাকবে। ঔষধের দোকান লকডাউন চলাকালেও সর্বদা খোলা থাকবে।

এদিকে গাজীপুরে এপর্যন্ত মোট ১১জনের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে দুইজন সুস্থ্য হয়েছেন। অন্যরা আইসোলেশনে রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে গাজীপুর মহানগরের এক কাউন্সিলরের দুই ভাতিজী এবং গাজীপুর সিভিল সার্জনের এক এমএলএসএস (পিওন) রয়েছেন।

গাজীপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীন জানান, করোনা সংক্রমন নিশ্চিত হতে শনিবার সিভিল সার্জন অফিসের স্টাফদেরও স্যাম্পল নেয়া হয়েছে।