করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিলগ্নে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কৃষকদের জন্য আরেকটি দুঃসংবাদ এসেছে। হাওরাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এ জন্য কৃষকদের দ্রুত ধান ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মূলত আগামী কয়েকদিন ভারতের মেঘালয় ও আসামের বরাক অববাহিকায় ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। আর ভারতের এই দুই রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হলে বন্যা দেখা দেবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অনেক হাওরেই।

আকস্মিক এ বন্যার শঙ্কায় এসব অঞ্চলের কৃষকদের দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘আগামী শুক্রবার থেকে চার দিন (১৭ থেকে ২০ এপ্রিল) দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের মেঘালয়-আসামে ১০০ মিলিমিটার থেকে ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের আভাস রয়েছে। এ সময় সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার এলাকায়ও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির প্রবণতা থাকবে। সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টিরও আভাস রয়েছে।‘

তিনি বলেন, ‘ভারী বর্ষণে সুনামগঞ্জের যাদুকাটা, সিলেটের সারিগোয়াইন এবং নেত্রকোণার কংস ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার শঙ্কা রয়েছে। ফলে এ নদ-নদী এলাকায় স্বল্পমেয়াদি বন্যার দেখা দিতে পারে। ২১ এপ্রিলের পর বৃষ্টিপাত কমে যেতে পারে।’

আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুসও চলতি মাসে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এপ্রিল মাসে দেশের উত্তর, উত্তরপশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে ২-৩ দিন বজ্রবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি থেকে তীব্র কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। এ সময় দেশের অন্যত্র ৪-৬ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা থেকে থেকে মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী হতে পারে।’

কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বলেন, ‘হাওরে ইতিমধ্যেই পাকা ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে কৃষকরা শ্রমিক পাচ্ছেন না। ধান কাটা ব্যাহত ও আগাম বন্যায় হাওরের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত যেন না হয় সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতিমধ্যে চিঠিও দিয়েছে।’