নীলফামারীর লকডাউন ঘোষনার মাত্র একদিনের মাথায় ভেঙ্গে পড়েছে জেলা প্রশাসন ঘোষিত লকডাউন। সব বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে বিভিন্ন ফ্যাক্টরির শ্রমিক সহ হাটবাজারে নেমেছেমানুষের ঢল। করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকিকে তুচ্ছ করে ঘর থেকে বাহিরে বেরিয়ে এসেছেন তারা। সচেতন মহলের দাবি এ ভাবে নীলফামারী জেলায় লকডাউন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।বুধবার(১৫ এপ্রিল) সকালে লকডাউন ঘোষনার দ্বিতীয় দিন লকডাউন ভেঙ্গে উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিকদের ঢল নামে।ভ্যান,রিক্সা,অটো,বাইসাইকেল,
মোটরসাইকেল নিয়ে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের বিভিন্ন ফ্যাক্টরীর শ্রমিকদের ঢল নামায় ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে সচেতন নাগরিকদের মাঝে। অভিযোগ উঠেছে, সরকারি ছুটি ১৪ এপ্রিল থেকে বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হলেও নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কারখানার শ্রমিকদের তা জানানো হয়নি।এ জন্য বুধবার(এপ্রিল) সকালে কর্মস্থলে যোগ দিতে হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ করোনা আতঙ্ক নিয়েই ইপিজেডে ছুটে আসে।শ্রমিকদের মোবাইল ফোনে কল করে বাধ্য করা হচ্ছে কর্মস্থলে আসতে। না আসলে চাকুরি থেকে বাতিল করা হবে এমন হুমকিও নাকি দেয়া হচ্ছে।নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করে ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থানে আসতে হচ্ছে তাদের।
বেশকিছু শ্রমিক জানায়, গত মাসের বেতন অনেকে এখনও পাননি। তারা বেতনের জন্য এসেছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতনমহল লিখছেন, করোনা যুদ্ধে প্রাণ বাঁচাতে
মানুষকে ঘরে রাখতে করা হয় লকডাউন। কিন্তু কেউ ঘরে থাকছেনা। লকডাউনের
দ্বিতীয় দিন সব বাধা উপেক্ষা করে রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারে দলবেঁধে নেমে পড়েছে মানুষজন।এদিকে নীলফামারী জেলার ১২৩টি হাটবাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের আটকানো যাচ্ছে না বলে দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের।নীলফামারী বড় বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, সব বাজারে পাকা-কাঁচা মাল দুটোইযায়। যার কারণে বাজারে লোকের সমাগম বেশি। বাজার যদি কোন মাঠে বা ফাকাস্থানে নেয়া হলে সামাজিক দুরত্বটা রাখা সম্ভব নতুবা নয়।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন,খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক উত্তরা ইপিজেডে কর্তৃপক্ষ সাথে কথা বলা হলে তারা আগামী ২৫ এপ্রিলপর্যন্ত উত্তরা ইপিজেড বন্ধের ঘোষনা দেন। পাশাপাশি সকল শ্রমিকদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয় এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত নিজ নিজ বাড়িতে থাকতে বলা হয়।

উল্লেখ্যঃ- এ জেলায় করোনা ভাইরাসে ৬ জন আক্রান্ত হয়ে নীলফামারী জেনারেল
হাসপাতালের আইসেলেশন ওয়াডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ছাড়া হোম কোয়ারেন্টাইনে
রয়েছে ৮ হাজার ২৭৭ জন । লকডাউন রয়েছে ৫ শতাধিক বাড়ি। এ অবস্থায় গতকাল
মঙ্গলবার(১৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী
নীলফামারী জেলাকে লকডাউন ঘোষনা করেন।

মহিনুল ইসলাম সুজন,বিশেষ প্রতিনিধি॥