একাত্তরের রণাঙ্গনের অকুতোভয় যোদ্ধা বীরপ্রতীক বদিউজ্জামান টুনু আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বীর প্রতীক বদিউজ্জামান টুনু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। গতকাল রবিবার দিনগত রাত ১২টার দিকে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন।

পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, বার্ধক্যজনিত কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই শারীরিক নানা সমস্যায় ভুগছিলেন বদিউজ্জামান টুনু। তার পা ভেঙে গিয়েছিল। সপ্তাহখানেক আগে তিনি স্ট্রোক করেন। এরপর তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর তাকে বাসায় নেওয়া হয়েছিল। গত শনিবার তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে আবারও রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার দিনগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তার মৃত্যু হয়।

প্রায় দুই বছর আগে বদিউজ্জামান টুনুর স্ত্রী ফিরোজা বেগম মারা গেছেন। তার দুই ছেলে তিন মেয়ে। এদের মধ্যে এক ছেলে থাকেন কানাডায়। আর এক মেয়ে থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। অন্য দুই মেয়ে থাকেন ঢাকায়। আর এক ছেলে থাকেন ঝাউতলার বাসায়।

বদিউজ্জামান টুনু ১৯৭১ সালে একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ৪২ বছর। ওই বয়সেই তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ভারতে গিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন। গেরিলাযুদ্ধের পাশাপাশি সম্মুখযুদ্ধও করেন। মুক্তিযুদ্ধে সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য বদিউজ্জামান টুনু বীরপ্রতীক খেতাব পান।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বদিউজ্জামান টুনুর বড় ভাইয়ের দুই ছেলে, ছোট ভাই, ভগ্নিপতি ও ভাগ্নি জামাই নজমুল হককে হত্যা করে। নাজমুল হক পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের এমএনএ (মেম্বার অব ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি) ছিলেন। বদিউজ্জামান টুনুর (বীরপ্রতীক) মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এক শোক বার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন মেয়র।