লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ভন্ড প্রেমিকের ফাদে পড়ে বিয়ের দ্বিতীয়দিনে সন্তান জন্ম দিয়েছেন এক তরুণী। বিয়ের পর স্বামীর সংসারে ঠাই না হওয়ায় বিপন্ন ঐ তরুণী ও সন্তানের জীবন। নিরুপায় হয়ে নবজাতককে বুকে নিয়ে ন্যায় বিচারের আশায় দ্বারেদ্বারে ঘুরছে মেয়েটির পরিবার।

এলাকাবাসী ও মামলা সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার নওদাবাস ইউনিয়নের জোড়াশাল পাগলা বাজার গ্রামের মৎসজীবী সুদাব চন্দ্র দাসের কিশোরী মেয়ে । ১০ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করতেন। মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে দুঃখের সংসারে হাসি ফোটার স্বপ্ন ছিল সুদাবের। কিন্তু তার সে স্বপ্ন বাস্তবে নিল ভিন্নরূপ। প্রতিবেশি দুই সন্তানের জনক সুধান চন্দ্র দাস ওই মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে পালাক্রমে ধর্ষন করে আসে। ধর্ষনের এক পর্যায়ে মেয়েটি ১০ মাসের অন্ত:সত্বা হয়। কিন্তু মেয়েটিকে বিয়ে করতে নারাজ ধর্ষক সুধান চন্দ্র। এক পর্যায়ে মেয়েটি নিরুপায় হয়ে সুধান চন্দ্র , সহযোগি হোসেন আলী, সুবির চন্দ্র দাস ও পালন চন্দ্র দাসকে আসামী করে স্থানীয় থানায় একটি ধর্ষনের মামলা করেন। সুচতুর সুধান চন্দ্র ধর্ষন মামলা থেকে বাঁচতে হোসেন আলীকে নিয়ে মেয়ের পরিবারকে ফুঁসলে ফাঁসলে বিভিন্ন ধরণের লোভ দেখিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে বিয়ে করেন। হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু ওই সমঝোতা বৈঠকে নেতৃত্ব দেয়। বিয়ের দু’দিন পরেই মেয়েটি একটি নবজাতকের জন্ম দেয়। সমঝোতা বৈঠকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু সুধান চন্দ্রকে ২৩ শতাংশ জমি কবলা করে দেয়ার চাপ দেয়। বিয়ের আড়াই মাসের মধ্যে পাচারের উদ্দেশ্যে মেয়েটিকে হোসেন আলীর সহযোগিতায় ঢাকায় নিয়ে যান। পরবর্তীতে আনোয়ার হোসেন মিরুর সহযোগিতায় মেয়েটি ঢাকা থেকে উদ্ধার করলেও তার সন্তানকে অন্যের কাছে দত্তক দেয়। পরে উদ্ধার হওয়া ওই কিশোরী হাতীবান্ধা থানায় শিশু উদ্ধারের অভিযোগ করলে স্থানীয় থানা শিশুটিকেও উদ্ধার করে দেয়। এ ঘটনার পর থেকে আসামীরা গা ঢাকা দেয়। অনেক চেষ্টা করে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু বলেন, ধর্ষনের মামলার বিষয়ে আমার তেমন কোন তথ্য জানা ছিলনা। তবে উভয় পরিবারের সম্মতির কারণে আমি সমঝোতা করেছি মাত্র।
হাতীবান্ধা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, এ বিষয়ে একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। আসামীরা পলাতক রয়েছে। লালমনিরহাট মেডিকেলে মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরন করা হবে।