সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম বলেছেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে মুখোমুখি করে জিঙ্গাসাবাদ করা হচ্ছে। যাতে ঘটনার আদ্যপ্রান্ত বেরিয়ে আসে।

আজ (২২ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে গ্রেফতার ৩ এপিবিএন সদস্যের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এসব কথা বলেন। খায়রুল ইসলাম জানান, আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ পেশাদারিত্বের মাধ্যমে এই হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। উচ্চতর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার পূর্বে এবং রিমান্ড শেষে আদালতে তোলার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমরা সব নিয়মই যথাযথভাবে পালন করছি।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গ্রেপ্তার এপিবিএন সদস্যদের কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে বের করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এপিবিএনের তিন সদস্যকে গত ১৮ আগস্ট গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করে র‌্যাব ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ৭ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মোকাম্মেল হোসেন জানান, কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর একটি দল এপিবিএনের তিন সদস্যকে জিজ্ঞাবাসাদের জন্য তাদের হেফাজতে নিয়ে গেছে। আদালতের আদেশে এই ৩ সদস্যকে র‌্যাব নিয়ে যায়। তারা হলেন, কক্সবাজার ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-পরিদর্শক শাহাজাহান, কনস্টেবল রাজীব ও আব্দুল্লাহ। এরা তিনজনই ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে দায়িত্বরত ছিলেন।

এর আগে গত ১৮ আগস্ট অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ জন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করে র‌্যাব। ওই দিনই বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে ৭ দিনের রিমান্ড নেয়ার আদেশ দেন তামান্না ফারাহ্র আদালত।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত। ওই ঘটনায় ওসি প্রদীপসহ মামলায় অভিযুক্ত ৩ আসামী র‌্যাব হেফাজতে রয়েছে। অন্য চার পুলিশ সদস্য এবং পুলিশের দায়ের করা মামলার ৩ সাক্ষী রিমান্ড শেষে এখন কারাগারে রয়েছে।

সবশেষ গত ২১ আগস্ট সিনহাকে গুলি করার ঘটনা প্রত্যক্ষভাবে সরেজমিন দেখতে এবং ঘটনার বিবরণ জানতে রিমান্ডে থাকা ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিততে নিয়ে শামলাপুরে যায় তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব।