চাঁদাবাজীর অভিযোগে থানায় মামলা এন্ট্রি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবসায়ীকে মারপিটের ভিডিও ভাইরাল হবার পর অবশেষে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহমেদকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত ১০ টার দিকে নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান রেজভি ও সাধারণ সম্পাদক আমানুজ্জামান সিউল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নীতি আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় রাজুকে দলীয় গঠনতন্ত্রের ১৭(খ) ধারা মোতাবেক আগামী তিন মাসের জন্য সাধারণ সদস্যপদ স্থগিত ও সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগ। তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি/সম্পাদক বরাবর সুপারিশও করা হয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মাহবুব মোরশেদকে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, গত ১০ সেপ্টেম্বর দলীয় প্যাডে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি/সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় ৩০ দিনের মধ্যে উপজেলা শাখার সম্মেলনের প্রস্তুতি গ্রহণ ও সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহমেদ পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানের আবেদনপত্র তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে রাজুর ব্যবহৃত মোবাইলফোন নম্বরে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পদ থেকে অব্যাহতি গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান রেজভি জানান, তিনি ফেসবুকে রাজুর অব্যাহতি দানের আবেদন দেখেছেন। কিন্তু সে পত্র হাতে পাননি। তিনি জানান, ‘চাঁদাবাজীর অভিযোগে তার (রাজু) বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা’ মর্মে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো গত ১০ সেপ্টেম্বর।১৩ সেপ্টেম্বর রোববার তিন দিন সময় শেষ হয়েছে। পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাজুকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত ৬ সেপ্টেম্বর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ডের আরএফএল ভিগো সোরুমের স্বত্ত্বাধিকারী সোহেল রানা বাদী হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহমেদ ও ছাত্রলীগ নেতা নয়নসহ আরও ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে মহাদেবপুর থানায় একটি চাঁদাবাজী ও অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন যে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তারা সোহেলের দোকানে গিয়ে তাকে মারধর করে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং ক্যাশ থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা, স্মার্টফোন ও মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।পরে সোহেলের দোকানের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে মারধরের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।