প্রথমবারের মতো উত্তরবঙ্গে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এ আগামীকাল শনিবার (১৭ অক্টোবর) নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই উপনির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। নতুন পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ নিয়ে ভোটারদের মাঝে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদ নামে পরিচিত এই আসনে দীর্ঘদিন থেকে নেই কোন হানাহানি। তবে যে প্রার্থীই বিজয়ী হোক না কেন, শান্তিতে থাকতে চান – এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর। সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতাবিহীন ভোটের পরিবেশ দাবি দুই উপজেলার ভোটারদের।

ছোটখাটো দু’একটি সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা তিনজন প্রার্থীই তাদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার কাজ চালিয়েছেন। তবে সাধারণ মানুষদের মাঝে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার প্রবণতা তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। ভোট নিয়ে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের মাঝে তেমনভাবে উৎসাহ কিংবা আগ্রহ নেই বললেই চলে। তবে এবার ইভিএমের প্রতি মানুষদের একটু আগ্রহ দেখা গেছে। বিশেষ করে নতুন ভোটারদের মাঝে ইভিএমে ভোট দেয়ার আগ্রহ অনেক বেশি।

অপরদিকে প্রার্থীরা সাধারণ মানুষদের মাঝে যার যার মতো করে প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাস দিয়েছেন। তবে যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তখন সেই দলের প্রার্থীকে বিজয়ী না করলে ওই এলাকার চলমান উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়বে বলে মত প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, আমি দুই উপজেলার মানুষের কাছে অতি পরিচিত একটি মানুষ। আওয়ামী লীগের দু:সময়ে আমার পরিবার ছিলো বাতিঘর। আওয়ামী লীগ করতে গিয়ে আমার এক ভাইকে সর্বহারারা দিনে-দুপুরে জবাই করে হত্যা করেছে। আমি বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রেখে এলাকার উন্নয়নে মাদক, বাল্যবিবাহ বন্ধসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসীর পাশে থাকবো। আশা করছি, এলাকার উন্নয়নে যেসব কাজ অসমাপ্ত রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করা ও শান্তির সুবাতাস ধরে রাখতে এলাকাবাসী নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন।

বিএনপি প্রার্থী রেজাউল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকে বাধাসহ নেতা-কর্মীদের বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। রাণীনগর উপজেলায় আমার কোন পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন টাঙ্গাতে দেয়া হয়নি। কিন্তু আমার জন্মস্থান আত্রাই উপজেলায় পাশাপাশি রয়েছে নৌকা ও ধানের শীষের পোস্টার ও ব্যানার।

অপরদিকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী ইন্তেখাব আলম রুবেল বলেন, আমি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের ভোট প্রদানে উৎসাহিত করার যুদ্ধে নেমেছি। কারণ বর্তমানে ভোটের প্রতি সাধারণ মানুষদের ঘৃণা আর অবহেলার সৃষ্টি হয়েছে। আগে ভোটের মাঝে আনন্দ আর উৎসবের ভাব ছিলো। বর্তমানে ভোট কেন্দ্রে না গেলেও ভোট হয়ে যায় – এমন ধারণা সাধারণ মানুষদের মাঝে জন্ম নিয়েছে। সাধারণ মানুষদের ভোট দেয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমার প্রধান লক্ষ্য।