গাজীপুরে পুলিশ দেখে নদীতে ঝাপ দিয়ে পালাতে গিয়ে নিখোঁজ তরুণের লাশ ঘটনার দু’দিন পর বৃহষ্পতিবার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে নদীতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগে নিহতের বাবা বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

নিহতের নাম- রাব্বি হাসান (১৯)। সে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার টিউরী এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে।

নিহতের বাবা ও স্বজনরা জানান, গত ২৭ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালীগঞ্জ থানাধীন তুমুলিয়া ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু বাজারের পাশে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নোঙ্গর করে রাখা এমভি মিথিলা সালমান নামের একটি কার্গো জাহাজে বসে চার বন্ধুর সঙ্গে রাব্বি হাসান মোবাইল ফোনে গেমস খেলছিল। এসময় পাশে নোঙ্গর করে থাকা অপর একটি কার্গোতে থাকা শান্ত (২৩), ইকবাল (২৬), রানা (৩০) ও নাদিম (৩০)সহ কয়েকজন যুবক সেখানে এগিয়ে আসে। এসময় তারা পূর্বশত্রুতার জের ধরে রাব্বিকে ঘিরে ফেলে মারধর করতে থাকে। মারধরের একপর্যায়ে লাথি দিয়ে নীচে নদীতে ফেলে পানিতে চুবিয়ে খুন করে। পরে লাশ নদীতে ফেলে তারা পাড়ে উঠে আসে। এসময় দু’পক্ষের হট্টোগোল শুনে ওই এলাকায় টহলরত পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ দেখে যুবকরা পালিয়ে যাওয়ার সময় শান্ত ও সাজেদ মিয়াকে আটক করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পুলিশ সদস্যরা। দীর্ঘ সময়েও বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা রাতে নদীতে তল্লাশি করেও কোন সন্ধান পায় নি। পরদিন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল দিনভর সেখানে তল্লাশি চালিয়েও রাব্বি হাসানের হদিস পায় নি। ঘটনার দু’দিন পর বৃহষ্পতিবার ভোরে রাব্বি হাসানের লাশ নদীতে ভাসতে দেখে এলাকাবাসি।

কালীগঞ্জ থানার ওসি এ কে এম মিজানুল হক জানান, বৃহষ্পতিবার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। রাব্বি হাসানকে মারধর ও পানিতে চুবিয়ে খুন করার অভিযোগে তার বাবা বৃহষ্পতিবার চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে আসামী করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাদক ব্যবসা ও সেবনের বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে আসামীরা পলাতক রয়েছে।

তিনি আরো জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রধান অভিযুক্ত শান্তসহ দু’পক্ষের দুইজনকে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৫১ ধারায় গ্রেফতার করে। বুধবার গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হলে তারা জামিনে মুক্তি পায়।