বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট মধ্য আকাশে থাকার সময় হার্ট অ্যাটাক করা পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’। রোববার (২৯ আগস্ট) বিমানের সিনিয়র পাইলট ক্যাপ্টেন শোয়েব চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে রোববার দুপুরে নওশাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিমানের বেশ কয়েকটি অসমর্থিত সূত্র তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নওশাদের মৃত্যুর ঘোষণা এখনও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেয়নি। তিনি এখনও লাইফ সাপোর্টে আছেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান জানান, পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর ক্যাপ্টেন নওশাদের ভেন্টিলেশন সাপোর্ট খুলে নেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে মেডিকেল টিম সিদ্ধান্ত নেবে।

ক্যাপ্টেন নওশাদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। বিমানের একটি সূত্র বলেছে, নাগপুরের হোপ হাসপাতালে কোমায় থাকা ক্যাপ্টেন নওশাদ ক্লিনিকালি ডেড। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দিতে অনুমতির অপেক্ষা করছে। কিন্তু পাইলটের আত্মীয়-স্বজন এখনই লাইফ সাপোর্ট খুলে দিতে চাচ্ছেন না। তাদের দাবি, নতুন করে মেডিকেল বোর্ড বসানো হোক। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তারাই সিদ্ধান্ত দিক। আত্মীয়-স্বজনদের এ দাবিতে বিমান কর্তৃপক্ষেরও সায় রয়েছে। এর আগে ওই হাসপাতালের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রোশান ফুলবান্ধে জানিয়েছিলেন, ক্যাপ্টেন নওশাদ ‘কোমায়’ আছেন।

বাংলাদেশ পাইলট এসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানান, তিনি একজন দক্ষ পাইলট। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়া সত্তেও তিনি দক্ষ হাতে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। তার প্রেসার বেড়ে যাওয়ায় মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। গত শুক্রবার মাসকাট-ঢাকা রুটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের শিডিউল ফ্লাইট বিজি ০২২ মোট ১২৪ যাত্রী নিয়ে ঢাকা আসার পথে পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করে।

এছাড়া শনিবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকার বলেছিলেন, মাঝ আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়লে সাথে সাথেই পাইলট কাইউম কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানান। একই সময়ে তিনি কো-পাইলটের কাছে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন। কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বিমানটিকে নিকটস্থ নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার নির্দেশ দিলে কো-পাইলটই বিমানটিকে সেখানে অবতরণ করান। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটির ১২৪ জন যাত্রীর প্রত্যেকেই নিরাপদে ছিলেন। জরুরি অবতরণের পর পাইলট কাইউমকে নাগপুরের হোপ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর সেখানে তার এনজিওগ্রাম করা হয়।