‘এটা খুব কঠিন (৬০-৭০ ভাগ ফিট হলেও খেলানো)। টেস্ট ক্রিকেট কঠিন। খেলা এবং অনুশীলনের মধ্যে না থেকে হুট করে এসে খেলা আরো কঠিন। এর ওপরে কোভিড থেকে সেরে উঠেছে। এটা টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডে ম্যাচ নয়। এখানে প্রায় ৬ ঘণ্টা মাঠে থাকতে হয়। অনেকটা সময়, পুরো পাঁচদিনই। এসব বিষয় অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। অবশ্যই আমরা তাকে পেতে চাই। সর্বকালের অন্যতম সেরা একজন ক্রিকেটার সে।’ – চট্টগ্রামের সাগরিকায় টাইগারদের অনুশীলন শেষে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সাকিব আল হাসানকে চট্টগ্রাম টেস্ট থেকে সরিয়ে নিয়েছিল চার দিন আগে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় । তবে আজ শুক্রবার পর পর তিন বার কোভিড টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্টৃ  পেয়ে বিসিবি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে সাকিবকে দলে টেনেছে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় দলের সঙ্গে যোগ দেবেন সাকিব। কাল ১৪ মে টেষ্টর আগের দিন শনিবার দলের সঙ্গে অনুশীলনেও নামার কথা রয়েছে। কিন্তু কয়েক ঘন্টা মাত্র অনুশীলন করেই ৫ দিনের টেষ্ট এ ধারবাহিকতা ধরে রাখা কতটা কঠিন কাজ সেটা সাকিব জানেন। তারপরও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাটা সাকিবের হাতে দিয়েছেন। কিন্তু বিসিবির প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলছেন, শতভাগ ফিট না হলে সাকিবের চট্টগ্রামে মাঠে নামার সুযোগ নেই।

টাইগার বাহিনীর সেরা অস্ত্র সাকিব। দলের ব্যাটিং, বোলিং দুই বিভাগেই সাকিব অপরির্হায সদস্য। সাগরিকায় ব্যাটিং করতে হবে ৬-৭ নম্বরে। বোলিং করতে হবে কমপক্ষে ১৫-২০ ওভার। আর ফিল্ডিং তো থাকছেনই। আগের টেষ্ট গুলোতে চট্টগ্রামে প্রায় সবই পাঁচ দিনে শেষ হয়েছে। এবারও ফ্ল্যাট উইকেটে খেলা হবে।  বৃষ্টি হানা না দিলে প্রথম টেস্টও পাঁচ দিনে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেট হলে সাকিব খেললে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হবেন। আর সেটা হতে দিতে রাজী নন প্রধান কোচ। সাকিবকে পরীক্ষায় না ফেলে পারফর্মের সুযোগ দিতে চান না ডমিঙ্গো।

ডমিঙ্গো সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে সে যেন তার পারফর্ম করার সকল সুযোগ পায়। আমাদের দেওয়া ভূমিকায় সে যেন ঠিকঠাক পারফর্ম করতে পারে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। একদিনে তাকে অন্তত ১৫ ওভার বোলিং করতে হবে। ব্যাটিংয়ে টপ সিক্স বা সেভেনে ব্যাটিং করতে হবে এবং তিন বা চার ঘণ্টা ব্যাটিং করতে হবে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কোভিডে আক্রান্ত হওয়া ডমিঙ্গো এ বিষয়ে অভিজ্ঞ। করোনা থেকে ফিরেই সুস্থ হতে সময়ের প্রয়োজন দাবি উল্লেখ করে ডমিঙ্গো বলেছেন, ‘আমারও কোভিড হয়েছিল। আমি জানি কতটা খারাপ অভিজ্ঞতা হয় এবং শরীরে শক্তি পাওয়া যায় না। কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ হতে সময়ের প্রয়োজন। আমাদের এসব বিবেচনায় আনতে হবে।

নিশ্চিতভাবেই তার ফিটনেস পরীক্ষা করতে হবে। কোভিড থেকে সেরে উঠেছে মাত্র এবং খুব বেশি ক্রিকেট কিন্তু খেলেনি। ও অবশ্যই আমাদের জন্য বড় খেলোয়াড়, যে দলে ভারসাম্য নিয়ে আসে। তাকে আগামীকাল আমরা দেখব। দুই তিন-সপ্তাহেরও বেশি সময় হয়ে গেছে ও ব্যাটিং বা বোলিং কিছু করেনি। হঠাৎ করে এসে পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচ খেলা কঠিন এবং পারিপার্শ্বিক অনেক কিছু চিন্তা করতে হবে। আমরা তাকে আগামীকাল পরীক্ষা করে দেখব।’

ডমিঙ্গো আরো বলেন, ‘যে কোনো দিনেই যে কেউ ফুল ফিট সাকিবকে তার দলে পেতে চাইবে। ৫০ বা ৬০ ভাগ ফিট একজন খেলোয়াড়কে টেস্ট ম্যাচ খেলানো কঠিন। পারফর্ম করার সুযোগ দেওয়ার জন্য একজন খেলোয়াড়কে পুরোপুরি ফিট হতে হবে।’