হজরত মোহম্মাদ (সা.)-কে নিয়ে বিজেপি নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ভারত সরকারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার বার্তা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশ।

হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, প্রথমে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখায় কাতার। তখন ভারতের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার বক্তব্যের সঙ্গে সরকার একমত নয়। এমনকি কেন্দ্রের শাসকদল তাকে প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করেছে।

সম্প্রতি একটি তথ্য যাচাইকারী ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জুবায়ের বিজেপির নূপুর শর্মার একটি ভিডিও টুইট করেছিলেন। সেখানে দেখা যায়, জ্ঞানবাপী মসজিদ সংক্রান্ত একটি আলোচনাসভায় মহানবী (সা.) ও তার স্ত্রী হজরত আয়েশা (রা.)-কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন নূপুর। সেই ঘটনা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। সেই পরিস্থিতিতে রবিবার নুপূরকে বরখাস্ত করে দেয় বিজেপি। সেই ঘটনায় নাম ওঠে আসা অপর বিজেপি মুখপাত্র নবীনকুমার জিন্দালকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়। সেই প্রেক্ষিতে নূপুর ক্ষমা চেয়ে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

এ কটূক্তির জেরে কাতার ভারতীয় দূতকে তলব করেছিল। সেই ধারা বজায় রেখে একে একে ইরান, কুয়েত ও সৌদি আরবও দূতকে তলব করেছে। এই আবহে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে ‘কিছুটা টান’ পড়েছে। সেইসঙ্গে ভারত সরকারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার বার্তা দেয় দোহা।

রবিবার কাতারে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, যে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে, তা ভারত সরকারের অবস্থান নয়। সেই মন্তব্য ভারত সরকারের মতাদর্শ নয়। সমাজের কোনো একটি অংশের মনোভাব সেটা। যারা সেই অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যদিও কাতারের তরফে ভারত সরকারকে জনসমক্ষে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। একই পথে হেঁটে কুয়েতও ভারতীয় দূতকে তলব করে জনসমক্ষে ক্ষমা চাইতে বলেছে।

এদিকে সৌদি আরবও ভারতীয় দূতকে তলব করে বিষয়টিকে ‘অপমানজনক’ আখ্যা দিয়েছে। তবে বিজেপি সেই নেত্রীকে বরখাস্ত করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

এ ছাড়া মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) ও পাকিস্তান।

বিজেপির বিবৃতি নাকচ করে দিয়ে ভারতীয় কংগ্রেস বলেছে, এটি ধোঁকাবাজি ছাড়া কিছুই নয়। এটি সুস্পষ্টভাবে প্রহসন এবং পরিস্থিতি সামলানোর আরেকটি নির্লজ্জ প্রচেষ্টা। টুইটারে একটি পোস্ট ট্যাগ করে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর লেখেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের অবমাননাকর বক্তব্যের পরে সৌদি আরব, বাহরাইনসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর সুপারমার্কেট থেকে ভারতীয় পণ্য সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।

এ দিকে একাধিক ঐতিহাসিক মসজিদকে হিন্দুত্ববাদীরা মন্দির দাবি করায় ভারতে উত্তেজনা বিরাজ করছে।