চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে নিহত ৪৯ জনের মধ্যে একজন যশোরের বাঘারপাড়ার ইব্রাহিম হোসেন (২৭)। সোমবার ভোরে তার মরদেহ উপজেলার জোহরপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামে এসে পৌঁছায়। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে শোকাবহ পরিবেশ তৈরি হয়।

নরসিংহপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আবুশ কাশেম মুন্সীর ছোট ছেলে ইব্রাহীম হোসেন। ছেলের মৃত্যুতে সাবেক এই শিক্ষক ও তার স্ত্রী দুলুপি বেগম নির্বাক হয়ে গেছেন।

শোকে মুষড়ে পড়েছেন নিহত ইব্রাহিমের আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুন্নি বেগম।

গত ২৮ জুলাই তিনি মা হবেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। ইব্রাহিম বলেছিলেন, ঈদের (ঈদুল আজহা) ছুটিতে বাড়ি এসে সন্তানের মুখ দেখবেন।

বিলাপ করছেন দুই বোন সেলিনা ও হালিমা।

নিহতের খালাতো ভাই নাজমুল হোসেন জানান, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের এক্সপোর্ট শিপিং সহকারী পদে চাকরি করতেন ইব্রাহিম।

শনিবার রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে দগ্ধ হন তিনি। এর আগে বাড়িতে মা, বাবা, স্ত্রীসহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তার মাথার পেছনে ও পেটে ভারী কিছুর আঘাত ও দগ্ধের চিহ্ন রয়েছে। মুখ, টি শার্ট ও মোবাইল ফোন দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। মৃত্যু পরও তার মোবাইল ফোনের ভিডিও অপশন চালু ছিল।

নাজমুল আরও জানান, অনেকের মতো ইব্রাহিম আগুনের ভিডিও ফেসবুকে লাইভ করছিলেন। কিছু সময় পর ডিপোর কনটেইনারগুলো বিস্ফোরিত হয়। এরপর থেকে ইব্রাহিম নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন রবিবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার লাশ পাওয়া যায়।

নাজুল হোসেনও সীতাকুণ্ডে প্রাণ আরএফএল গ্রুপের অন্য শাখায় চাকরি করেন।

জোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু বলেন, পাঁচ বছর আগে চট্টগ্রামে চাকরি পান ইব্রাহিম। দেড় বছর আগে নিজের গ্রামেই বিয়ে করেন। তার এমন মৃত্যু পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সকাল নয়টায় ইব্রাহিমকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।