সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আতঙ্কিত ও শিহরিত জনপদে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। এখন প্রতিদিনই আমাদের নেতাদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তুলে নিয়ে কয়েকদিন গুম রাখার পর গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। জামিন বাতিল করে জেলে পুরছে আমাদের নেতাদের।’ আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘সারাদেশে প্রতিদিন বিএনপির নেতাদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে আওয়ামী পুলিশ। বিএনপি নেতাদের বাড়িতে অভিযানকালে হয়রানি, দুর্ব্যবহার করছে। নারীদের অপদস্থ করছে। ১২ বছর আগে মারা যাওয়া ফরিদপুরের সাবেক কমিশনার ও শহর বিএনপির সভাপতি প্রয়াত বাচ্চু মিয়া আলীর বাড়িতে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, যিনি এক বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন তার বাড়িতে সাদা পোশাকধারী লোকজন হানা দিয়েছে। তাদের বাড়িতে অভিযানকালে নারীদের সঙ্গে ন্যাক্কারজনক আচরণ করেছে পুলিশ।’

রিজভী আরও বলেন, ‘ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে গণগ্রেপ্তার করতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। নগরকান্দায় সাতজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ফরিদপুরে অন্তত ছয়জন নেতার বাড়িতে অভিযানের নামে হয়রানি করেছে পুলিশ। প্রতিটি গণসমাবেশ বানচাল করার জন্য যানবাহন-পরিবহন বন্ধ করে দিচ্ছে। পথে পথে হামলা করছে। গ্রেপ্তার মামলা করছে। তাতে কি শেখ হাসিনা রুখতে পারবেন এই জনতার সাগরে ওঠা টালমাটাল জোয়ার। বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের অনুকুল সমাজভূমি বলে কিছু নেই। এখানে ফ্যাসিবাদ বেশিদিন টিকতে পারবে না। আপনারা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন যত দ্রুত অনুভব করবেন ততই আপনাদের মঙ্গল। আপনাদের সময় শেষ। দ্রুত সংসদ ভেঙে দিন, অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরে যান।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, ‘দুই মাস আগেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুব খোশ মেজাজেই ছিলেন। তার এই সুবচন নির্বাসনে গেল কদিন পরেই। এই অমিয় বচন উবে গেল। যখন তিনি দেখলেন জনগণ রাজপথে নেমেছে, লাখে লাখে-বেশুমার। চোখে সরষে ফুল দেখতে শুরু করলেন তিনি।’

রহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এখন সরকারকে বুঝতে হবে অতীতের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবারের আন্দোলনের মাত্রা হবে ভিন্ন। এবারের আন্দোলনে নতুন ডাইমেনশন তৈরি হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাংগঠনিক দক্ষতা ও অসামান্য নেতৃত্বের কারণে সারাদেশে একনায়কতান্ত্রিক ফ্যাসীবাদী সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে জনগণের স্বতঃফূর্ত অংশগ্রহণে আন্দোলন এখন গণমুখী। জনতার হাতে স্টিয়ারিং। মাফিয়া সরকার ও তাদের পোষ্যরা কোনক্রমেই রুখতে পারবে না এই গণজোয়ার। জনগণের লক্ষ্য বিজয়। সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে যেখানে যে বাধা আসবে তা প্রতিহত করেই এগিয়ে যাবে তারা। এবার আন্দোলনের সুনামি হবে। সেই সুনামিতে সরকার ভেসে যাবে।’