ভারতের শিলিগুড়ি লুমানিগড় তেল শোধনাগার থেকে ১৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের মাধ্যমে পার্বতীপুরে এসে পৌঁছেছে জ্বালানি তেল। দেশে প্রথমবারের মতো পাইপ লাইনে জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারায় বছরে সাশ্রয় হবে শত কোটি টাকা।

এর আগে শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী দিনেই প্রায় ১ হাজার ৯৩০ মেট্রিক টন ডিজেল তেল রিসিভড করে পার্বতীপুরের রিসিভ টার্মিনাল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে পার্বতীপুর রিসিভড স্টেশনকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। প্রধান ফটকে শোভা পায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি।

দুই দেশের দুই প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে সাজানো হয় পার্বতীপুরের প্রধান প্রধান সড়কের দু’ধার। উপজেলা পরিষদ হল রুমে আয়োজন করা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী। প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান এমপি। উপস্থিত ছিলেন পিবিসির পরিচালক অপারেশন খালেদ আহম্মেদ, অপারেশন মার্কেটিং অনুপম বড়ুয়া, পদ্মা কোম্পানির এমডি মো. মাসুদুর রহমান, মেঘনা কোম্পানির এমডি মো. আবু সালেহ ইকবাল, যমুনা কোম্পানির এমডি গিয়াস উদ্দিন আনসারী, পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলাম প্রামানিক. পৌর মেয়র মো. আমজাদ হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইসমাঈল। পরে অতিথিরা জ্বালানি তেল রিসিভড স্টেশন ঘুরে দেখেন।

ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপ লাইন স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক টিপু সুলতান বলেন, পাইপলাইন তৈরির কাজ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে চীন থেকে সময় মতো মোটা পূরত্বের স্টিলের পাত আনতে না পারায় ট্যাংক নির্মাণের কাজ শেষ করা যায়নি। বর্তমানে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি পেয়েছে। জুনের মধ্যে ট্যাংক নির্মাণের কাজ শেষ করার প্রচেষ্টা চলছে। আপাতত রেলওয়ের হেড ডিপোতে তেল সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রথম দিকে বছরে আড়াই লাখ মেট্রিক টন ডিজেল তেল আমদানি করবে। পরবর্তীতে চাহিদা অনুযায়ী তা ৪-৫ লাখ টনে বৃদ্ধি পাবে।

প্রকল্পের কমিশনিং টিমের কো-অর্ডিনেটর এএসএম আহসান হাবিব বলেন, ভারত বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অনন্য নিদর্শন। ভারত থেকে আমাদেরকে প্রতি বছর আড়াই লাখ মেট্রিক টন তেল সরবরাহ করবে। চাহিদা বাড়লে তারা বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন পর্যন্ত তেল সরবরাহ করবে। প্রকল্পটির পুরোপুরো প্রস্তুত করা হয়েছে। যেসব তেল ভারত থেকে নিয়ে আসা হবে তা উত্তরাঞ্চলের ৮টি জেলায় সরবরাহ করা হবে। সব চাহিদা এই পাম্পের মাধ্যমেই সম্পন্ন করা হবে। মূলত নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত জ্বালানি তেলের প্রয়োজন হয়। এই সময়টাতে ওয়াগন সমস্যার কারণে চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। এই প্রকল্পটি এমনভাবে করা হয়েছে যাতে করে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হয় এবং নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে।