নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে ঢাকা দিবাকালীন নতুন ট্রেনের নামকরণ নিয়ে দেখা দিয়েছে বিভ্রাট। ২৯ মে এক পত্রে ট্রেনটির নাম ‘নীলফামারী এক্সপ্রেস’ উল্লেখ করা হলেও ৩০ মে অপর পত্রে ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’, আরেক পত্রে ‘নীলসাগর’ এক্সপ্রেস উল্লেখ করা হয়। ট্রেনটির নাম বিভ্রাট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই পছন্দের নামের পক্ষে এবং বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তুলে ধরছেন নানা যুক্তি।

এমন অবস্থানে ‘নীলফামারী এক্সপ্রেস’ নাম বহালের দাবিতে বুধবার(৩১ মে) দুপুরে জেলাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে। মানববন্ধন শেষে সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কান্তিভুষন কুন্ডু। বক্তব্য দেন, নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আরিফা সুলতানা লাভলী, নীলফামারী মডেল কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা, ব্যবসায়ী মোর্শেদ আজম, ছাত্র নেতা মাহমুদ হাসান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেইফ ফাউন্ডেশনের প্রধান সম্বয়কারী রাসেল আমিন স্বপন, সাবেক ছাত্র নেতা মিজানুর রহমান, সাংবাদিক ভূবন রায় নিখিল, মঞ্জুরুল আলম সিয়াম, মোশাররফ হোসেন, বিজয় চক্রবর্তী কাজল, এম আর রাজু, মাহমুদ আল রাফিন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন,গত ২৯ মে বাংলাদেশ পশ্চিমাঞ্চল রেলের চীপ অপারেটিং সুপারেণ্টেনডেণ্ট মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ স্বাক্ষরিত পত্রে ওই ট্রেনের নাম করা হয় ‘নীলফামারী এক্সপ্রেস’। ৩০ মে রেলপথ মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব (অবিরিক্ত দায়িত্ব) মো. তৌফিক ইমাম স্বক্ষরিত আরেক পত্রে একই ট্রেনের নাম ইল্লেখ করেন ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’। একই দিন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার আরেক পত্রে উল্লেখ করেন ‘নীলসাগর’। নামের এমন বিভ্রান্তি পরিহার করে জেলার নামে ‘নীলফামারী এক্সপ্রেস’ নাম করণের দাবি জানান তারা। উদাহরণ তুলে বক্তারা আরো বলেন, ‘উত্তরের বিভিন্ন জেলায় আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। এসব জেলায় ট্রেনের নামকরণ হয়েছে ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস,’ ‘কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস’, ‘লালমনি এক্সপ্রেস’, ‘রংপুর এক্সপ্রেস’। নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে ঢাকা চলাচলকারী ট্রেনের নামকরণ ‘নীলফামারী এক্সপ্রেস’ নামটি যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়। উদ্বোধনের আগে ট্রেনটির নাম নীলফামারী এক্সপ্রেস চুড়ান্ত করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচির আল্টিমেটাম প্রদান করেন বক্তারা।

সূত্রমতে, ৪ জুন সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালী ট্রেনটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে শনিবার বাদে সপ্তাহের ছয় দিন চিলাহাটি-ঢাকা নিয়মিত চলাচল করবে ট্রেনটি। চিলাহাটি থেকে সকাল ছয়টায় ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছবে বিকাল তিনটা ১০ মিনিটে। ঢাকা থেকে বিকাল সোয়া চারটায় ছেড়ে চিলাহাটি পৌঁছবে রাত পৌনে দুইটায়। চায়না থেকে আমদানী করা নতুন ১১টি কোচের ওই ট্রেনের আসন সংখ্যা ৭৯২টি। চিলাহাটির পর বিরতি রয়েছে ডোমার, নীলফামারী, সৈয়দপুর, পার্বতীপুর, জয়পুরহাট, সান্তাহার, ইশ^রদি বাইপাস ও বিমানবন্দর স্টেশনে।

পশ্চিমাঞ্চল লেরওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিানর নির্দেশ অনুযায়ী চিলাহাটি-ঢাকা রেলপথে নতুন দিবাকালীন আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নতুন ট্রেনটি ট্রায়ালও শেষ করা হয়েছে। জেলাবাসীর স্মারকলিপির ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘আমি স্মারকলিপি পেয়েছি। স্মারকলিপিটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে।

সুজন মহিনুল, ক্রাইম রিপোর্টার নীলফামারী॥