আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন করতে চায় না। তারা চায় পূর্ব অভিজ্ঞতার মতো পেছনের দরজা দিয়ে কারোর সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন কমিশনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর হবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্ট রায় দিয়ে বলেছেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পূর্ণ অবৈধ। আইন পাশ করে সংবিধান থেকে এটা বের করে দেওয়া হয়েছে, সেখানে আর ফিরে যাওয়া যাবে না।

শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। খাড়েরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আবদুল্লাহ ভূইয়ার বাড়িতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুল হক বলেন, বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশের ভালো চায় না। তারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে। তারা ক্ষমতায় থেকে জাতির পিতার হত্যার যাতে বিচার না হয় সেজন্য আইন করেছে এবং তাদেরকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার সুযোগ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা ১৯৪৮ সাল থেকে শুরু করে কারো সঙ্গে আঁতাত-আপস না করে বাংলাদের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করেছেন। পাকিস্তানের ইয়াহিয়া-আইয়ুব খানের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ছাড়া সবাই আতাত করেছে। আপনারা ইতিহাস দেখেন তারা সবাই আপস করার চেষ্টা করেছে এবং আপস করেছে। উনাকে (বঙ্গবন্ধু) আপসের কথা বলা হয়েছে। উনি বলেছেন জেলখানায় যেতে রাজি আছি, তবুও আপস করব না। তারা সবাই মিলে জাতির পিতাকে হত্যা করেছে। এখন তারা (বিএনপি-জামায়াত) চেষ্টা করছে যাতে বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়। তারা চেষ্টা করছে বংলাদেশের গ্যাস বিক্রি করে দিতে এবং চেষ্টা করছে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য। আমরা ভুলে যাই না যে এ ষড়যন্ত্র তারা করবেই।

আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশের উন্নয়নের রুপকার। তিনি বাংলাদেশকে তাদের (বিএনপি-জামায়াত) সৃষ্টি করা ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে উন্নয়নের রোল মডেলে পৌঁছে দিয়েছেন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আনিসুল হক বলেন, আমাদেরকে বড় বড় শত্রুর মোকাবিলা করতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

তিনি বলেন, বিএনপি যদি আবার ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশ আবার নৈরাজ্যের দেশ হয়ে যাবে। আমরা আর ওই অবস্থায় ফিরে যাব না। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে উঠে গেছে। এ ধারা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।

মন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল তারা একটি মডেল মসজিদও করেনি। অথচ তারা ধর্মের কথা বলে কাত-চিৎ হয়ে যায়। তারা বলত, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে উলুধ্বনি পড়বে। অথচ জননেত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করেছেন।

তিনি বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) আখাউড়া-লাকসাম রেলের ডাবল লাইন উদ্বোধন হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন চালু করা হবে। এখন পাঁচ ঘণ্টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেনে যাতায়াত করা যায়।

খাড়েরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আবদুল্লাহ ভূইয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মীর হেলালের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল কাওসার ভূইয়া, কসবা পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানী, কসবা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. আজহারুল ইসলাম, মো. আনিছুল হক ভূইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এমএ আজিজ, কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র এমরান উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম, কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আফজাল হোসেন।

এ সময় বক্তব্য দেন- খাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কবির আহাম্মদ খান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ আইয়ুবুর রহমান, খাড়েরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক বাছির মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রহমান প্রমুখ।