উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২১০০ ছাড়িয়ে গেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন আরও প্রায় দুই হাজার মানুষ। আহতদের অনেকের অবস্থা সংকটাপন্ন। খবর রয়টার্সের।

গত শুক্রবার রাতে মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ওই শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে।

দেশটির সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকারীরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পার্বত্য গ্রামগুলোতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন। দুর্গম হওয়ায় অনেক এলাকায় পৌঁছাতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। অনেক স্থানে ভবনের ধ্বংসস্তূপে এখনো অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।

রেডক্রস বলছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্গঠনে কয়েক বছর সময় লাগবে। মৃতের প্রকৃত সংখ্যা এখনো জানা যাচ্ছে না।

ভয়াবহ এই ভূমিকম্প ও হতাহতের ঘটনায় রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ দেশটিতে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন এবং বেঁচে যাওয়াদের আশ্রয়, খাবার ও অন্যান্য সাহায্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মারাক্কেশ শহর থেকে ৭১ কিলোমিটার দূরে এটলাস পর্বতমালা এলাকার ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার গভীরে। স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। ভূমিকম্পটির ১৯ মিনিট পর আবারও ৪ দশমিক ৯ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয়। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বেশ কিছু গ্রাম পুরোপুরি সমতল হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

ইউএসজিএস বলছে, ১৯৬০ সালের পর শুক্রবারের এই ভূমিকম্প দেশটিতে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। ওই বছর দেশটিতে শক্তিশালী এক ভূকম্পে কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তবে শুক্রবারের ভূমিকম্প মরক্কোতে গত এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল।

জাতিসংঘ বলেছে, তারা মরক্কো সরকারকে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে প্রস্তুত। এছাড়া স্পেন, ফ্রান্স এবং ইসরায়েলসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে একই ধরনের প্রতিশ্রুতি এসেছে।