কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় কারও কোনো গাফলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নাঙ্গলকোট তেজের বাজার উরকুটি এলাকায় উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।

রেলমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনার পর এখন আমরা যারা কাজ করছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে নিরাপদ যাত্রায় মানুষকে পৌঁছে দেওয়া যায়। আমরা এ ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা চাই। আজকে যেমন এখানে কথা হচ্ছে যে কয়েকটা ছেলেপেলে এখানে ফিস প্লেট খুলে ফেলেছে। আবার আমরা দেখলাম রেলের স্লিপারের খুব দুর্বল অবস্থা। এখানে মেইনটেন্যান্সের ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপাটাও আমরা খতিয়ে দেখব।

তিনি আরও বলেন, যেকোনো দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। তবে দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন আমরা আপনাদের সহযোগিতায় তার ব্যবস্থা করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস। এখানে আমরা এসেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে। তিনি আমাদের বলেছেন- তোমরা সেখানে যাও, লোকজনের সাথে কথা বলো। তার নির্দেশ পেয়ে আমরা এখানে এসেছি। তিনি জানেন আমরা এখানে এসেছি। তিনি খুব খুশি হয়েছেন। এ ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ।

এর আগে, ১৭ মার্চ দুপুর ১১টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় বিজয় এক্সপ্রেস। দুপুর পৌনে ২টায় নাঙ্গলকোটের হাসানপুরে পৌঁছালে তেজের বাজার এলাকায় বগি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ট্রেনের ইঞ্জিন। ১৫ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে পরদিন ভোর ৫টায় চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে চার দিন পর সম্পূর্ণ উদ্ধার কাজ শেষ করে রেলওয়ে। এই ঘটনায় নাশকতার অভিযোগে লাকসাম রেলওয়ে থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়। এই মামলায় চার জন ১৮ বছরের কম বয়সীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে কুমিল্লার লাঙ্গলকোটে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ.বি.এম ফজলে করিম চৌধুরী রেললাইন সুরক্ষায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন।

এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম রেলপথ। কিন্তু বারবার এ রেলকে ঘিরে নাশকতা চালানো হচ্ছে। যার ফলে রেল সেক্টরকে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। কুমিল্লার লাঙ্গলকোটে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় যারা জড়িত, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।