বাগেরহাট থেকে রুহুল আমিন বাবুঃ শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরের উচ্চমানসহকারি (অফিস সহকারী) মোঃ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ সাধারণ মানুষের সাথে স্বেচ্ছাচারী ও অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে (২১ মার্চ) খুলনার বিভাগীয় কমিশনার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে শরণখোলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দিন আকন শান্ত, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন মুক্তা, সাবেক চেয়ারম্যান এম এ রশিদ আকন, শরণখোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইসমাইল হোসেন লিটন, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি বদরুজ্জামান আবু গাজী, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবুল দাস, রায়েন্দা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান বাবুল এ অভিযোগ দাখিল করেছেন।
লিখিত অভিযোগে তারা জানান, উচ্চমানসহকারি মোঃ রফিকুল ইসলামের কর্মকান্ডে এলাকার জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, শিক্ষক, সাংবাদিক, এনজিও কর্মীসহ সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তিনি নিজেকে বিভাগীয় কমিশনারের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে জনসাধারণকে সব সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, তাকে ইউএনও বা জেলা প্রশাসক কেউ কিছু করতে পারবে না। এমনকি বিগত পাঁচ বছরে যে কয়জন ইউএনও শরণখোলায় যোগদান করেছেন রফিকুল ইসলামের কুট কৌশলের কারনে সবাই তার কাছে একপ্রকার জিম্মি হয়ে থেকেছেন। এমনকি বাজারের ব্যবসায়ীরা তাকে স্যার না ডাকলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি দেয়ার হুমকি দিয়ে থাকেন। এছাড়া তিনি বীর নিবাস পাইয়ে দেয়ার কথা বলে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের দায়ের করা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আরেকটি অভিযোগ শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম তদন্ত করেন। কিন্তু কৌশলে তিনি ওই তদন্ত ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
বিভাগীয় কমিশনার অফিস সূত্রে জানা-গেছে, রফিকুল ইসলাম ইতোপূর্বে ঘুষ-দুর্নীতি দায়ে বিভাগীয় মামলায় দোষী সাব্যস্থ হয়। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অপিল করলে মানবিক কারনে তাকে বরখাস্ত না করে শাস্তিমূলক বদলি হিসেবে দূরবর্তীস্থান শরণখোলায় প্রেষণে বদলি করা হয়।
এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দিন আকন শান্ত বলেন, রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিদিন বিভিন্ন মানুষ অভিযোগ নিয়ে আসেন। তার স্বেচ্ছাচারিতায় সবাই এখন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাই অবিলম্বে এখান থেকে তাকে বদলী করা প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এব্যাপারে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনার দপ্তর থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধার দেয়া একটি অভিযোগ আমার কাছে তদন্তের জন্য দিয়েছিল। সেটি এখন রিপোর্টের অপেক্ষায় অছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত উচ্চমানসহকারি মোঃ রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।