গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গরু চুরি করতে গিয়ে মামা-ভাগ্নে দুইজন গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে। কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এব্যাপারে শুক্রবার অজ্ঞাত ৩শ’ জনকে আসামী করে কাপাসিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছে স্থানীয় গ্রাম পুলিশের এক সদস্য।

নিহতরা হলো- ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানার পাঁচাহার এলাকার আবু সাহিদ শেখের ছেলে হৃদয় শেখ (২২) এবং একই থানার চাকোয়াপাড়া (ভিটিপাড়া) এলাকার মাসুদ শেখের ছেলে নাসির শেখ (৩২)। এদেরমধ্যে হৃদয় শেখের চাচাতো ভাগ্নে মাসুদ শেখ।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে গরু চুরি করতে কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামের কৃষক মোসলেম উদ্দিনের বাড়িতে প্রবেশ করে গরু চোরদলের কয়েক সদস্য। এসময় টের পেয়ে বাড়ির লোকজন ডাকচিৎকার শুরু করলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। লোকজন আসতে দেখে চোরদলের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী ধাওয়া করে প্রথমে নাসির শেখ নামের একজনকে আটক করে। পরে উত্তেজিত লোকজন গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এসময় অপর হৃদয় নামের অপর একজন দৌড়ে পাশের বড়িবাড়ি গ্রামের এক ধানক্ষেতের লুকিয়ে থাকে। উত্তেজিত এলাকাবাসী খোঁজাখুঁজি করে তাকেও ওই ধানক্ষেত থেকে বের করে এনে গনপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারও মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় গরু চোরদলের অপর সদস্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। মৃত্যুর আগে হৃদয় নিজেকে চোর নয় দাবী করে জানায় নদীর পাড়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে মারামারি করার কথা বলে সঙ্গীরা তাকে এনেছিল।

সিংহশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার পারভেজ জানান, সম্প্রতি গ্রামে গরু চুরি বেড়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই গ্রামের কোনো না কোনো কৃষকের বাড়ীতে গরু চুরি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ ও কৃষক তাদের গরু গোয়াল ঘরে রেখে রাতে ঘুমাতে পারছে না। গরু চুরি রোধে এলাকাবাসী মিলিত হয়ে পাহারা বসিয়েছিল। অব্যাহত গরু চুরির নিয়ে গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত। এতে ঘটনার রাতে গরু চুরি করতে আসা আটক দুইজনকে গণপিটুনি দিলে তাদের মৃত্যু হয়।

এব্যাপারে কাপাসিয়া থানার ওসি আবু বকর মিয়া জানান, কাপাসিয়ার সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামের মোসলেমের বাড়ীতে গরু চুরি করতে গেলে দ্জুনকে আটক করে গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ময়না তদন্তের জন্য লাশ দু’টি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে স্থানীয় গ্রাম পুলিশের সদস্য জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অজ্ঞাত ২৫০ থেকে ৩শ’জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।