images

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর: জামায়াতে ইসলামীকে মানবতা ও মনুষ্যত্বের শত্রু বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম৷ তিনি বলেন, যেখানে তাদের পাওয়া যাবে, সেখানেই রুখে দাঁড়াতে হবে৷জামায়াতের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে কেউই কোথাও এদের হাত থেকে নিরাপদ নয়৷ যেখানেই মানবতাবিরোধী- সেখানেই প্রতিরোধ করতে হবে৷

আশরাফ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে বিএনপি-জামায়াতের তান্ডব : রক্তাক্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক ডিভিডির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন৷ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে৷ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, জামায়াত মানবতার শত্রু৷ এরা এমন একটি সংগঠন কোথায়ও আল-কায়েদা, কোথায়ও তালেবাদ৷ তারা সারা বিশ্বে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে৷

সৈয়দ আশরাফ বলেন, যেখানেই সুযোগ হবে- সেখানেই জামায়াতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে৷ আমরা চাই আর না চাই, এ যুদ্ধ আমাদের ওপর আসবেই৷ এ যুদ্ধকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে৷ এ যুদ্ধে আমাদের জয়লাভ করতে হবে৷জামায়াতের কর্মকান্ডের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, একাত্তরে আমরা তাদের তা-ব দেখেছি৷ আমাদের হিটলারের তান্ডব দেখার সুযোগ হয়নি৷ তবে তাদের (জামায়াত) তান্ডব মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছি৷ডিভিডি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৭১ সালে তারা যে তান্ডব চালিয়েছে- এ ভিডিও চিত্র তারই আরেকটা কপি৷

মানবতার যুদ্ধে কেউই নিরপেক্ষ থাকতে পারে না, এ মন্তব্য করে আশরাফ বলেন, আমরা কেউ নিরপেক্ষ নই৷ সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী কেউই আসলে নিরপেক্ষ নন৷ যারা নিজেদের নিরপেক্ষ বলেন তারা স্বীকার করতে চান না, তারা কোন-পক্ষের লোক৷ মিডিয়া, ভিডিও চিত্র, লিখনী, যুক্তিতকের্র মাধ্যমে সন্ত্রাসী তা-বের বিরুদ্ধে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি৷

জামায়াতে ইসলামী আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সহযোদ্ধা বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম৷সৈয়দ আশরাফুল বলেন, অপশক্তি জামায়াত, তাদের দোসর সহযোদ্ধারা বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে৷ তা আমাদের এখানে আসতে বেশি দেরি হবে না৷ আজকে কেউই কোথাও এদের হাত থেকে নিরাপদ নয়৷

তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অনেক আগেই শুরু করেছি৷ জামায়াত এখানে একটা নাম৷ এরা কোথায়ও আল-কায়েদা, কোথাও তালেবান, কোথাও আইএস৷ এরা মানবতার শত্রু৷ যেখানেই সুযোগ হয়, সেখানেই তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে৷ আমরা চাই আর না চাই, এ যুদ্ধ আমাদের ওপর আসবেই৷ এ যুদ্ধ আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে৷ এ যুদ্ধে আমাদের জয় লাভ করতে হবে, যোগ করেন আশরাফ৷মিডিয়া, ভিডিওচিত্র, লিখনী, যুক্তিতর্কের মাধ্যমে সন্ত্রাসী তাণ্ডবের বিরুদ্ধে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি৷

মুঞ্জরুল আহসান বুলবুল বলেন, রাজনীতি এখন রাজনীতিতে নেই৷ এটা তথ্য সন্ত্রাসে চলে গেছে৷ কেউ লন্ডনে বসে, কেউ বা জনসভায় গিয়ে বক্তৃতা করে মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত বিষয়গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে৷ এদের বিরুদ্ধে আমাদের তথ্য-উপাত্ত ও যুক্তি দিয়ে জবাব দিতে হবে৷আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আজকে যে ডিভিডির মোড়ক উন্মোচন করা হলো, এটা ছড়িয়ে দিতে হবে৷অনুষ্ঠানের শুরুতে বিএনপি জামায়াতে তান্ডব : রক্তাক্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক ভিডিও চিত্রটি প্রদর্শন করা হয়৷ ভিডিও চিত্রে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ও মানবতাবিরোধী বিচার বানচালে বিএনপি জামায়াতের সহিংসতার তথ্যচিত্র তুলে ধরা হয়৷

অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইবু্যনালের কৌঁসুলি তুরিন আফরোজ বলেন, আজ প্রতিমুহূর্তে আমাদের প্রমাণ করতে হয় ‘৭১ যে ৭১ ছিল৷ বাংলাদেশই বিশ্বের একমাত্র সহনশীল দেশ, যে দেশে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরাও রাজনীতি করছে৷

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রজেক্টরের মাধ্যমে ডিভিডিতে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের শরিক দলগুলোর পেট্রলবোমা নিক্ষেপ,ককটেল ফাটিয়ে গাড়িতে আগুন দেওয়া, পুলিশকে হত্যা, গাছ নিধন, ফটিকছড়ির ভুজপুরে আওয়ামী লীগের মিছিলে হামলা, যশোরের অভয়নগরের মালোপাড়ায় হামলার চিত্র তুলে ধরা হয়৷ এ ছাড়া ডিভিডিতে সহিংসতায় আহত কয়েকজন ও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য সনি্নবেশ করা হয়েছে৷ ভিডিওচিত্র চলার সময় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা অশ্রুসজল হয়ে যান৷ অনেকে উচ্চ স্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন৷

দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সুপ্রীম কোট বার আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক স. ম রেজাউল করিম, আন্তর্জাতিক ট্রাইবু্যনাল আদালতের প্রসিকিউসর ড. তুরিন আফরোজ, রোকেয়া কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন৷