খালেদা জিয়া-Khaleda zia

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে বেসরকারি মুঠোফোন কোম্পানি গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক সচল হয়েছে।মঙ্গলবার দুপুর থেকে কার্যালয়ের ভেতর থেকে গ্রামীণফোনে কথা বলা যাচ্ছে।অন্যান্য বেসরকারি মুঠোফোন কোম্পানির নেটওয়ার্কও সচল করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।বিএনপির চেয়ারপারসন কার্যালয়ের সূত্র জানায়, দুপুর থেকে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে। তবে মুঠোফোন ছাড়া অন্য সংযোগগুলো এখনো বন্ধ আছে।

গত ৩০ জানুয়ারি দিবাগত রাত পৌনে তিনটায় খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। এর পরদিন দুপুরের দিকে বিভিন্ন মুঠোফোন কোম্পানির সংযোগ, ইন্টারনেট, কেবল টিভি, টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। প্রায় ১৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ৩১ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে বিদুৎ্য সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়। তবে অন্য সংযোগগুলো বিচ্ছিন্ন ছিল। টেলিটক ছাড়া অন্য ফোন নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছিল না।

একাধিক মুঠোফোন কোম্পানির সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দূতাবাসগুলোর মুঠোফোন নেটওয়ার্ক চালু করে দিতে বিটিআরসি থেকে মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গুলশান এলাকায় মুঠোফোন কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্ক সচল করা হয়। তাঁরা বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো বাড়িতে নেটওয়ার্ক চালু বা বন্ধ করা সম্ভব নয়। ভিটিএসের ট্রান্সিভার (ট্রান্সমিটার ও রিসিভার) চালু করে দেওয়ার কারণে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে ও নেটওয়ার্ক পাওয়া যেতে পারে।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ের আশপাশে মুঠোফোনের নেটওয়ার্কের জটিলতার কারণে টেলিফোন যোগাযোগ ও ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে সমস্যায় ছিল কয়েকটি দূতাবাস। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের আশপাশে জাপান, নেদারল্যান্ডস ও স্পেন দূতাবাস মুঠোফোনের নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে টেলিফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারে অসুবিধার বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানায়। তিন দূতাবাসের অনুরোধের বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে(বিটিআরসি)জানিয়েছিল।

এদিকে, খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে ঢিল মেরেছেন এক যুবক, যেখানে গত এক মাসের বেশি অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যদের উপস্থিতির মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে খালেদার কার্যালয়ের ভিতরে ঢিল ছোড়া হয়। পরে ওই যুবককে আটক করে নিয়ে যান গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের ওই যুবক বেলা দেড়টার দিকে বিএনপি নেত্রীর কার্যালয়ের সামনে ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে একটি ইটের টুকরো ভেতরের দিকে ছুড়ে মারেন। ভবনের সামনের দেওয়ালে টাঙিয়ে রাখা খালেদা জিয়ার আলোকচিত্রের পাশে গিয়ে লাগে ঢিলটি।

ওই সময় ফটকের বাইরে সাদা পোশাকে পুলিশের বিশেষ শাখার দুই সদস্য চেয়ারে বসা ছিলেন।পুলিশ দ্রুত ওই যুবককে ধরে ফেলে বলে ঘটনাস্থল থেকে ।আটকের পর ওই যুবক বলেন, অবরোধে পেট্রোল বোমায় তার এক আত্মীয় মারা গেছেন। এই ক্ষোভ থেকে খালেদা জিয়ার অফিসে ঢিল মেরেছেন তিনি।দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে কর্মসূচি ঘোষণার পর গত ৩ জানুয়ারি গুলশানের এই কার্যালয়ে এসে আটকা পড়েন খালেদা জিয়া।

পরে ৫ জানুয়ারি কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হয়ে সারা দেশে লাগাতার অবরোধের ডাক দেন তিনি। পরে খালেদার কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশের ব্যারিকেড সরলেও সেখানেই আছেন বিএনপি নেত্রী।

এদিকে এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা অবরোধে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে ৬০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন শতাধিক মানুষ। অন্যদিকে, অধিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আরো কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে নীল রঙের একটি পিকআপ ভ্যানে করে ২০ বান্ডিল কাঁটাতার নিয়ে আসা হয়। পরে সেগুলো কার্যালয়ের ভেতরে রাখা হয়।এগুলো এখন লাগানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চেয়ারপরসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।

তিনি জানান, কাঁটাতারগুলো স্টিলের তৈরি। এর আগে যে কাঁটাতার আনা হয়েছিল তা লাগানো হয়েছে। কিন্তু কার্যালয়ের চারদিক কভার হয়নি। তাই এগুলো লাগানোর জন্য আনা হয়েছে। এখন লাগানো হচ্ছে।সরেজমিনে দেখা গেছে, কার্যালয়ের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের দেয়ালের ওপরে কাঁটাতারের বেষ্টনী নেই। সড়কমুখী দুইদিকেই কাঁটাতারের বেষ্টনী রয়েছে।