uzirpur fight

দৈনিকবার্তা-গৌরনদী (বরিশাল), ০৩ মার্চ : প্রেমের সম্পর্কে জের ধরে মেধাবী এক কলেজ ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। কলেজ ছাত্র সুকদেব মিস্ত্রি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী প্রেমিকার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে চারটি বসত ঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে থানা পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করে। এসময় অন্তত ১০জন আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ও সোমবার রাতে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ি গ্রামে।

সরজমিনে জানাগেছে, ওই গ্রামের সুপেন মিস্ত্রির পুত্র ও ঢাকার তিতুমীর কলেজের অনার্স প্রথমবর্ষের মেধাবী ছাত্র সুকদেব মিস্ত্রির (২২) সাথে একই গ্রামের দশরাথ সমদ্দারের কন্যা মিতু সমদ্দারের (১৯) দীর্ঘদিন থেকে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। কিন্তু উভয় পরিবারের মতবিরোধের কারণে তাদের এই প্রেম পরিনয়ে বাধাঁ হয়ে দাড়ায়। সুখদেবের বাবা সুপেন মিস্ত্রি বাধ্য হয়ে ছেলেকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। নিহতের পিতা সুপেন মিস্ত্রি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মেয়ের বিবাহ উপলক্ষে সোমবার আমার বুকের মানিক সুখদেব বাড়িতে আসে। রাতে বিয়ের ঢাকঢোলের মধ্যে সুখদেব বাড়ি থেকে বেড় হয়ে আর ফিরে আসেনি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে স্থানীয় কৃষক সমির বল্বভ মিতুদের বাড়ির পশ্চিম পার্শ্বের বাগানে সুকদেবের লাশ পরে থাকতে দেখেন। পরবর্তীতে তিনি আমাদের খবর দেন। আমার ছেলেকে মিতুর পরিবার পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।’

সুখদেব হত্যার খবর মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পরলে সুকদেবের স্বজনেরা ও গ্রামবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মিতু ও তার পরিবারের সদস্যদের দায়ী করে দশরাথ সমদ্দারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে বসত ঘরসহ চারটি ঘর, একটি মন্দির এবং দুইটি খড়ের পালায় অগ্নিসংযোগ করে। হামলায় দশরাথ সমদ্দার (৭৫), তার স্ত্রী (৬০), কন্যা মিতু, কনক, নমিতা, পুত্র সজল সমদ্দারসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। স্থানীয় লিটন হালদার, স্বপন কুমার জানান, সুখদেবের সাথে মিতুর প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি মিতুর পরিবার। অনেক আগ থেকেই সুখদেবকে তারা হুমকি দিয়ে আসছিল। এদিকে প্রেমিকা মিতুর বাবা দশরাথ সমাদ্দার বলেন, এই হত্যাকান্ডের সাথে আমরা জড়িত নই। আমাকে নি:শ্ব করা জন্য ষড়যন্ত্র করে আমাদেরকে ফাঁসানো হয়েছে। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম-পিপিএম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সুকদেব মিস্ত্রিকে শ্বাষরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। খবর পেয়ে হারতা পুলিশ ক্যাম্প ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা ও ঘরে অগ্নি সংযোগের পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের অভিযোগে প্রেমিকা মিতুসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।