15584926885_4e56f907ae_b

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩০ মার্চ: বাংলাদেশের বাজারে প্রায় সব পণ্য পাইরেসি (নকল) হচ্ছে। এর ফলে সরকার বছরে প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।ইন্টেলেকচুয়েল প্রোপাইটি এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (আইপিএবি) এর মহাসচিব মো. আজিজুর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিবেদন অনুসারে এ তথ্য জানান।সোমবার রাজধানীর নিউ ডিওএইচএস আইপিএবি কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান।আইপিএবি আগামী ২২ এপ্রিল পাইরেসি (নকল) রোধ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে আরআরবিজি (নকল রুখবো, চোরাচালান রুখবো, রাজস্ব বাড়াবো, দেশ গড়বো) নামে একটি ক্যাম্পেইন চালু করতে যাচ্ছে।

সভায় সাংবাদিক জ ই মামুন বলেন, পাইরেসি রোধ নিজ থেকে শুরু করতে হবে। আইনের প্রয়োগ পরে আসবে। পাইরেসি শুধু সামাজিক নয় অর্থনীতিতে বিশাল ক্ষতি করছে।অভিনেত্রী আফসানা মিমি বলেন, পাইরেসির ক্ষেত্রে সবচে ঝুঁকিতে স্বাস্থ্যখাত। বাংলাদেশে সব পণ্য কম বেশি নকল হচ্ছে। এত কিছুর পরও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সময় এসেছে মেধাসত্ত্ব সংরক্ষণ ও বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরা।অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী ও শমী কায়সারও বক্তব্য দেন।সভায় অংশ নেওয়া কয়েকজন আলোচক বলেন, সবাই সচেতন না হলে আইন করে পাইরেসি রোধ কোনদিনই সম্ভব নয়।আজিজুর রহমান বলেন, পাইরেসির ফলে বাজারে যে নকল সিগারেট বিক্রি হয় সেখানে বছরে রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে ৫০ কোটি টাকা। চোরাচালানে সরকার বছরে রাজস্ব হারাচ্ছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। পণ্য পাইরেসিতে রাজস্ব হারাচ্ছে প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা। দেশের সব পণ্য কম বেশি নকল হচ্ছে। যার ফলে মেধাসত্ত্ব হারানোর পাশাপাশি রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য হবে নকল রোধে সামাজিক সচেনতনতা তৈরি। একই সঙ্গে মেধাসত্ত্ব অধিকার আইন (আইপিআর) সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা।তামাক, ঔষধ, পোশাক, তথ্য প্রযুক্তিসহ ২২টি খাতের ( সেক্টর) কর্পোরেটদের সঙ্গে আইপিআর বিষয়ে আলোচনা করে পাইরেসি প্রতিরোধে কী সমস্যা দেখা যায় তা চিহ্নিত করা হবে।একই সঙ্গে পণ্যের নকল প্রতিরোধে প্রতিবন্ধকতা, পাইরেসি বন্ধে প্রত্যাশা ও রাজস্ব ক্ষতির দিক তুলে আনা হবে। পাশাপাশি পাইরেসি অর্থনীতিতে কী পরিমাণ ক্ষতি করে তাও তুলে ধরা হবে।তিনি আরও বলেন, পাইরেসিতে বিশ্বের ৭৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৭তম। অথচ অর্থনীতিতে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ ৬৮ তম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পাইরেসি, চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে গবেষণা করা হলেও আমাদের দেশে তেমন করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় না।পাইরেসি ও চোরাচালান রোধে পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইথোপিয়া, শ্রীলংকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ব্যবহার ও আইনের প্রয়োগ বাড়িয়েছে। এরফলে সেসব দেশে পাইরেসি ও চোরাচালান কমে গিয়ে রাজস্ব আয় বাড়ছে। পাইরেসি বিষয়ে গবেষণা, কঠোর আইন প্রয়োগ, মনিটরিং এবং সামাজিক ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করলে নকল রোধ সম্ভব ও মেধাসত্ত্ব অধিকার সমুন্নত হবে বলে আজিজুর রহমান তার বক্তব্যে যোগ করেন।