f13967

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১১ আগস্ট ২০১৫: রাজনৈতিক কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।এর আগে তিনি বাংলাদেশে নিযুক্ত স্লোভেনিয়ার রাষ্ট্রদূত দারজা বাবদাজ কুরেতের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।গত ২৯ জুলাই থেকে বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের ১২২টি দেশ ও অঞ্চলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) পুনর্বহাল করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ নেই।এ বিষয়ে জানতে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কারণ ছাড়া, রাজনৈতিভাবে বাংলাদেশকে বিবেচনা করা ছাড়া এটা (জিএসপি) না পাওয়ার কোন কারণ নেই। যেখানে বারাক ওবামা নাইরোবিতে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন, সেখানে সামান্য জিএসপি সুবিধা না পাওয়ার কোন কারণ নেই। তবে এতে বাংলাদেশের কোন ক্ষতি হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) ফিরে পেতে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১২২টি দেশের পণ্যে জিএসপি নবায়ন করা হলেও সেই তালিকায় বাংলাদেশের নাম না থাকার প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে মন্ত্রী একথা জানান।বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জিএসপি পাওয়ার জন্য আমি কোনো উদ্যোগ নিতে রাজি না। আমরা আমাদের শর্ত পূরণ করেছি, আমাদের আর কিছু করার নেই।তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংগঠন ‘আমেরিকান অর্গানাইজেশন অব লেবার-কংগ্রেস ফর ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (এএফএল-সিআইও) এর আবেদনে ২০১৩ সালের ২৭ জুন বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়।

তার আগে জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেসের (জিএসপি) আওতায় বাংলাদেশ পাঁচ হাজার ধরনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধায় রপ্তানি করতে পারত। তবে এর আওতায় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য ‘ তৈরি পোশাক ছিল না।২০১২ সালে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এই সুবিধার আওতায় তিন কোটি ৪৭ লাখ ডলারের তামাক, ক্রীড়া সরঞ্জাম, চিনামাটির তৈজসপত্র ও প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করেন, যাতে তারা শুল্ক ছাড় পান ২০ লাখ ডলারের মতো।রাজনৈতিক কারণে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা দেয়নি বলে দাবি করেন তোফায়েল। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি ফিরে না পেলে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না।জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ১৬টি শর্ত পূরণ করা হয়েছে দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমার ধারণা ওই সব শর্তের চেয়েও আমরা বেশি কিছু করেছি, এরপরও তারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করবে না।রাজনৈতিক কারণ ছাড়া জিএসপি ফিরে না পাওয়ার কোনো কারণ নেই।ওবামা বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন, সেখানে সামান্য জিএসপি সুবিধা না পাওয়ার কোনো কারণ নেই।৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অসন্তোষ ছিল, যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে মন্ত্রীদের কেউ কেউ প্রকাশ্য সমালোচনাও করেছেন তখন।জিএসপি ফিরে পেতে ট্রেড ইউনিয়ন বাধা কি না- এ প্রশ্নে তোফায়েল বলেন, আমি অনেক কথা বলতে চাই না। তৈরি পোশাককে জিএসপি দেয় না, মার্কেট এক্সেস দেয় না। কিন্তু তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের নিয়ে তারা কথা বলে।আমরা আশা করব, আমাদের সঙ্গে যেহেতু টিকফা আছে, এর আওতায় তারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করবে,বলেন তিনি।