mobilebanking1430127916

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫: একসময় শুধুমাত্র ব্র্যাক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বিকাশ ছাড়া সব মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ক্ষুদ্র আমানতে সুরক্ষা দেয়ার কথা চিন্তা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ কিন্তু মোবাইল ব্যাংকিং এর অধিকাংশ গ্রাহক বিকাশের হওয়ায় এবং বিকাশে গ্রাহকের ৮০০ কোটি টাকা আমানত থাকায় গ্রাহকদের আমানতকে সুরক্ষার আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩৬৩তম পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ বিকাশ গ্রাহকের আমানতকে প্রস্তাবিত আমানত সুরক্ষা আইন ২০১৪-এর আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ারও সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে৷ সভার গৃহীত সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে- ব্র্যাক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বিকাশের গ্রাহকদের আমানত সুবিধার আওতায় আনতে হবে৷ যেহেতু অন্য সব মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহকরা আমানতে বীমা সুবিধার আওতায় আসছে৷ বিকাশকে এ সুবিধার আওতায় আনতে প্রস্তাবিত আমানত বীমা আইন-২০১৪ এর যেখানে, যে ধরনের সংশোধনী/পরিবর্তন প্রয়োজন তা করা হবে৷ কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং এ সংযুক্ত সব গ্রাহকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আমানতকে সুরক্ষা দিতে চায়৷ এসব বিষয়ের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরবর্তী পর্ষদ সভায় উত্থাপন করতে বলা হয়েছে৷ বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে৷

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, সব মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহক যেখানে আমানত বীমা সুবিধার আওতায় আসবে সেখানে বিকাশ বাদ পড়ে ছিল৷ কিন্তু তার গ্রাহকদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আমানত একটি বড় অংক হওয়ায় এটি আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে৷এজন্য বোর্ড মিটিং এ সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রস্তাবিত আমনত সুরক্ষা আইন ২০১৪ এর যে সব জায়গায় সংশোধন প্রয়োজন তা করার৷ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিকাশে প্রতি মুহূর্তে গ্রাহকের আমানত জমা থাকে ৮০০ কোটি টাকা বা তারও ওপরে৷ প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকের সংখ্যা ১ কোটি ৮০ লাখ৷ এ বিশাল অংকের আমানতে সুরক্ষার কথা যখন চিন্তা করা হয়েছিল তখন সেটা আইনের আওতায় পড়ছিল না৷ তাই সিদ্ধান্ত হয়েছিল সুরক্ষা না দেয়ার৷ কিন্তু এটা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের সুরক্ষার৷ যার মধ্য দিয়ে নিরাপদ হতে চলছে বিকাশে গ্রাহকের ৮০০ কোটি টাকার আমানত৷

উল্লেখ্য, ব্যাংক লেট মডেল অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকদের অপরিশোধিত (জমা থাকা ই-মানি) অর্থ ক্লাস্টার (গুচ্ছ) অ্যাকাউন্ট হিসেবে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অথবা ভিন্ন একটি নামে গ্রাহক আমানতের অন্তর্ভুক্ত করে বীমা নির্ধারণীতে দাখিল করে৷ প্রতিটি গ্রাহকের আলাদা আলাদা পরিচিতিমূলক তথ্য ব্যাংকের হিসাবের খাতায় অন্তর্ভুক্ত থাকে৷ যার ফলে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৭৩ ধারা অনুযায়ী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় পরিচালিত গ্রাহকের আমানত এককভাবে বিদ্যমান ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০ কিংবা প্রস্তাবিত আমানত সুরক্ষা আইন ২০১৪ এর আওতায় সুরক্ষিত৷ আর এ প্রক্রিয়াটি বিকাশের কার্যক্রমে নেই বলেই তাদের আমানতকে সুরক্ষা দিতে পারছিল না কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ এজন্যই এবারে প্রস্তাবিত আমানত সুরক্ষা আইন ২০১৪ এর আওতায় বিকাশের আমানতে সুরক্ষা দিতে যেসব জায়গায় সংশোধন প্রয়োজন তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷