মুসলিম বহুবিবাহ প্রথা বন্ধের পরামর্শ গুজরাট হাইকোর্টের

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৬ নভেম্বর ২০১৫:  ভারতের গুজরাটের হাইকোর্ট অভিন্ন দেওয়ানি দণ্ডবিধি তৈরি ও মুসলিম বহুবিবাহ প্রথা বন্ধের পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ভারতের মুসলিম সমাজে বহুবিবাহ প্রথাকে ‘চরম জঘন্য পিতৃতান্ত্রিক আচরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন আদালত।শুক্রবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার মুসলিম ব্যক্তিগত আইন সংস্কার করতে পরামর্শ দিয়ে আদালত বলেছেন, এখনকার দিনে ও সময়ে ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে বহুবিবাহ করা হয়ে থাকে।গুজরাটের হাইকোর্টের বিচারক জেবি পারদিওয়ালা মুসলিম এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে করা তাঁর স্ত্রীর মামলার বিচার করছেন। ওই স্ত্রীর অভিযোগ, স্বামী তাঁর অনুমতি না নিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন।মামলার বিচারকাজ পরিচালনাকালে বিচারক পারদিওয়ালা বলেন, ‘আধুনিক প্রগতিশীল চিন্তার ভিত্তিতে ভারতের অবশ্যই এই প্রথা (বহুবিবাহ) বন্ধ করতে হবে এবং অভিন্ন দেওয়ানি দণ্ডবিধি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগে মুসলিম ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারায় মামলা করেছেন। কিন্তু মুসলিম ব্যক্তিগত আইন অনুযায়ী ওই ব্যক্তির দ্বিতীয় বিয়ে করা বৈধ। এ কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগে ওই ব্যক্তির বিচার করা যাবে না।বিচারক পারদিওয়ালা বলেন, স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বহুবিবাহ প্রথা ও একতরফা তালাক ভারতীয় সংবিধানের লঙ্ঘন। সংবিধানের চতুর্থ অধ্যায়ের ৪৪ অনুচ্ছেদের বরাত দিয়ে বিচারক বলেন, দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সারা দেশে অভিন্ন দেওয়ানি দণ্ডবিধির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য ও যৌন আকাঙ্ক্ষার জন্য পবিত্র কোরআনে বহুবিবাহ করতে নিষেধ করা হয়েছে এমনটা উল্লেখ করে বিচারক পারদিওয়ালা বলেন, ‘চরম জঘন্য পিতৃতান্ত্রিক বহুবিবাহ প্রথা যথার্থতা প্রমাণ করতে পবিত্র কোরআনের অপব্যবহার করা হবে না, এটি মৌলভি ও মুসলিম পুরুষদের নিশ্চিত করতে হবে।ইতিহাসের উদ্ধৃতি দিয়ে বিচারক পারদিওয়ালা আরও বলেন, একটি শোষণমূলক সমাজে এতিম শিশু ও তাদের মায়েদের রক্ষা করতে পবিত্র কোরআনে শর্তসাপেক্ষে বহুবিবাহের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনকার দিনে নিজ স্বার্থের জন্য মানুষ এ রীতিকে ব্যবহার করছে।